প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৪ এপ্রিল রেল বোর্ডের তরফ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল যে কর্তব্যরত অবস্থায় কোনো লোকো পাইলটরা (Train Drivers) ‘মিল ব্রেক’ নিতে পারবেন না। শুধু তাই নয় ‘নেচারস কল’-এ সাড়াও দেবেন না তাঁরা। কারণ, উল্লিখিত রিপোর্টে রেলের কমিটি এই প্রসঙ্গে জানিয়েছে, ‘নট অপারেশনালি ফিজিবল’। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। শেষে এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল ট্রেন চালকদের সর্বভারতীয় সংগঠন। আর এই আবহে এবার ডিউটিতে ব্যক্তিগত ফোন ব্যবহার বন্ধ নিয়ে তৈরী হল নয়া বিতর্ক।
ট্রেন চালকদের জন্য নয়া নির্দেশিকা!
সম্প্রতি রেল মন্ত্রকের সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেন চালকদের ডিউটির সময়ে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন সুইচড অফ করে রাখতে হবে। অর্থাৎ ট্রেন চালানোর সময় শুধুমাত্র অফিসিয়াল ফোন চালু রাখতে পারবেন লোকো পাইলট এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলটরা। যদি সারপ্রাইজ চেকিংয়ে নির্দিষ্ট ওই সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন চালু অবস্থায় পাওয়া যায় তাহলে ওই ট্রেনচালক এবং সহ চালককে শাস্তির মুখেও পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। একমাত্র ট্রেন দুর্ঘটনা কিংবা কোনও প্রযুক্তিগত সমস্যার মতো আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কথা বলা যাবে অফিসের সঙ্গে। আর এমন নিয়ম এবার জারি করার পথে হাঁটতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
অন ডিউটিতে বন্ধ রাখতে হবে ফোন!
এছাড়াও রেল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অফিসিয়াল নম্বর সত্যিই অফিস সংক্রান্ত কমিউনিকেশনে ব্যবহার হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আচমকা কল লগ খতিয়ে দেখা হতে পারে। অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে বেশ চাপের মুখে পড়েছে লোকো পাইলটরা। সেক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে ডিউটিতে যোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট লোকো পাইলট এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলটদের কাছে যদি কোনও পার্সোনাল মোবাইল ফোন থাকে, তাহলে তার নম্বর এবং পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার নামও উল্লেখ করতে হবে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনই সরকারিভাবে কোন ঘোষণা করা হয়নি।
আরও পড়ুন: স্টেশনে ঢুকে করাতে পারবেন বডি ম্যাসাজ, নয়া সুবিধা কলকাতা মেট্রোয়
এদিকে রেল মন্ত্রকের একের পর এক আজব নির্দেশিকায় ক্ষুব্ধ রেল বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। তাঁরা কটাক্ষকরে জানিয়েছেন যে, ট্রেনের চালক এবং সহ চালকরা চাকরি করছেন নাকি স্কুলে পড়তে যাচ্ছেন, তা বোঝা যাচ্ছে ন। তাই এই ব্যাপারে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে লোকো পাইলটদের সংগঠন। অন্যদিকে রেল কর্তাদের একাংশ মনে করছেন এই সিদ্ধান্ত খুবই যুক্তিপূর্ণ। কারণ, যাত্রী সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আসলে অনেক সময় দেখা যায় লোকো পাইলটরা ফোনে ডুবে গিয়ে সিগন্যাল জাম্প করে যায়। যার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এবার দেখার পালা কেন্দ্র কোন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটে।