শ্বেতা মিত্র, হরিদ্বারঃ দেশে এবার আরও এক অবাক করা ঘটনা ঘটে গেল। সকলে এমন এক জিনিস আবিষ্কার করলেন যেটি সম্পর্কে জানার বা দেখার কথা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। গঙ্গার নিচে কিনা দেখা মিলল আস্ত রেল ট্র্যাকের। হরিদ্বারে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে যা সকলকে চমকে দিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, এও সম্ভব? আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
গঙ্গার নিচে রেললাইন | Haridwar har ki pauri rail line under ganges |
আসলে হরিদ্বারে গঙ্গা খাল বন্ধ হওয়ার পর বিখ্যাত ‘হর কি পৌরি’ ও ভিআইপি ঘাটে বয়ে যাওয়া গঙ্গার স্রোত শুকিয়ে গেছে। যে কারণে গঙ্গার তলদেশে কী আছে দৃশ্যমান। তেমনি গঙ্গার তলদেশ দেখা দেওয়ার কারণে ভিআইপি ঘাটের কাছে গঙ্গার ভেতরে রেললাইনে লোহার ট্র্যাক দেখা যায়, যা মানুষের মধ্যে তীব্র কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এখন জানতে ইচ্ছুক এই রেলপথটি দিয়ে কি আগে ট্রেন চলাচল করত?
আসলে হরিদ্বারের হর কি পৌরিতে গঙ্গার জলের অভাবে গোটা ঘাট শুকিয়ে গিয়েছে এবং পাদদেশ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি স্থানীয় কিছু মানুষজন গঙ্গার নিচে থাকা রেললাইন আবিষ্কার করেন। হরিদ্বার রেলস্টেশন থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রেললাইনগুলি মানুষের মনে কৌতূহল তৈরি করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রেললাইনের ভিডিও ও ছবি শেয়ার করে নানা দাবি করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, আগে এই জায়গায় ছোট ট্রেন চলত, আবার কেউ কেউ বলছেন জলে ছোট গাড়ি চলাচল করত। সত্যিই কি তাই?
কী বলছেন ইতিহাসবিদরা?
ঘটনা প্রসঙ্গে হরিদ্বারের বিশেষজ্ঞ আদেশ ত্যাগী জানিয়েছেন, ১৮৫০ সাল নাগাদ গঙ্গা খাল নির্মাণের সময় এই রেললাইনের উপর দিয়ে ঠেলাগাড়ি চলত। এই ঠেলাগাড়িতে করে নির্মাণ সামগ্রী বহনের কাজে ব্যবহার করা হত রেললাইনটি। ভীমগৌড়া ব্যারেজ থেকে ড্যাম কোঠি পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ শেষ হওয়ার পরে, ব্রিটিশ আধিকারিকরা কাজের জায়গায় পরিদর্শন করার জন্য ব্যবহার করতেন রেললাইনটি। এটি ইঞ্জিনিয়ার কোটলির তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ আমলে এরকম অনেক বড় বড় নির্মাণ করা হয়েছিল, যেগুলোর আধুনিক ভারতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ঐতিহাসিকদের দাবি, ভারতের প্রথম রেলপথ রুরকি কালিয়ারের কাছে স্থাপিত হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ আরও কম সময় দাঁড়াবে লোকাল ট্রেন, শিয়ালদা লাইনে কমল স্টপেজ টাইম! যাত্রী ভোগান্তির আশঙ্কা
উল্লেখ্য, প্রতি বছরই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঙ্গা খাল বন্ধ করে দেয় উত্তরাখণ্ডের সেচ দফতর। এতে হরিদ্বারের দৃশ্য পুরোপুরি বদলে যায়। গঙ্গার জল শুকিয়ে যেতে থাকে। এবারও সেটার ব্যতিক্রম ঘটেনি।