প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতার ভার গ্রহণ করার পরেই প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে দেশে দারিদ্র্যের ভার কমানো হবে। আর ঠিক সেই অনুযায়ী, গত ১০ বছরে দেশে ২৩ কোটি মানুষকে দারিদ্রের আওতা থেকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যা গোটা দেশের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি স্টেট ব্যাঙ্কের (State Bank of India) গবেষণায় এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। যার মাধ্যমে আশা করা যাচ্ছে আগামী দিনে শহরাঞ্চলে দারিদ্রের হার আরও কমে যেতে পারে।
অনেকটাই কমেছে গ্রামীণ অঞ্চলে দারিদ্র্যের ভার
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্ট্যাটিসটিক্স অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেনটেশন মন্ত্রক ‘হাউজহোল্ড কনসাম্পশন এক্সপেনডিচার সার্ভে’ শীর্ষক একটি সমীক্ষা করেছিল। আর সেই সমীক্ষাতে উঠে এসেছে এক আশ্চর্যজনক তথ্য। তাতে দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে দারিদ্রের হার কমে পাঁচ শতাংশেরও নীচে নেমে গিয়েছে। ২০২৩ অর্থবর্ষে দেশে গ্রামীণ অঞ্চলে দারিদ্রের হার ছিল ৭.২ শতাংশ। কিন্তু ২০২৪ অর্থবর্ষে সেই দারিদ্রের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৮৬ শতাংশে। আর এতেই স্পষ্ট গ্রামীণ অঞ্চলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে শেষে দারিদ্র্যের হার। তবে গ্রামে দারিদ্র্যের হার নিয়ন্ত্রণে আসলে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে শহরাঞ্চলে।
এক দশকে শহরাঞ্চলেও দারিদ্রের হার কমেছে
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট মারফৎ জানা গিয়েছে, দেশে গ্রামাঞ্চলে দারিদ্রের হার ধীরে ধীরে অনেকটা কমলেও, শহরাঞ্চলে দারিদ্রের হার সামান্য বেড়ে গিয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ২০২৪ এ দেশে শহরাঞ্চলে দারিদ্রের হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪.০৯ শতাংশ। কিন্তু ২০২৩ অর্থবর্ষে ভারতের শহরাঞ্চলে দারিদ্রের হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৬ শতাংশ। অর্থাৎ এর থেকেই স্পষ্ট যে শহরাঞ্চলে দারিদ্র্যের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু ২০১২ র অর্থবর্ষে গ্রামীণ ভারতে দারিদ্রের হার ছিল ২৫.৭ শতাংশ। এবং শহরাঞ্চলে ভারতে দারিদ্রের হার ছিল ১৩.৭ শতাংশ। সবমিলিয়ে গত এক দশকে গ্রামের পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও দারিদ্রের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে।
এছাড়াও, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গবেষণায় জানানো হয়েছে, মাসিক ভিত্তিতে ক্যাপিটা ইনকামের পার্থক্য অনেকটাই কমেছে। যেখানে ২০০৯-১০ সালে, শহর ও গ্রামের মধ্যে এই আয়ের পার্থক্য ছিল ৮৮.২ শতাংশ। এখন সেই পার্থক্য অনেকটাই কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯.৭ শতাংশে। যার ফলে দেশে ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার, গ্রামীণ পরিকাঠামোর উন্নতি, কৃষকদের আয় বাড়ানোর চেষ্টা সফল হয়েছে। তবে কম-রোজগারের রাজ্যগুলিতে সঞ্চয়ের ভাণ্ডারকে বারবার প্রভাবিত করে চলেছে মূল্যবৃদ্ধি। প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সঞ্চয় খুবই কম হচ্ছে ৷ তবে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব উচ্চ আয়ের রাজ্যগুলিকে তেমন একটা প্রভাবিত করতে পারেনি ৷ তাইতো উচ্চ-আয় সম্পন্ন রাজ্যগুলির বেশির ভাগের সঞ্চয়ের হার জাতীয় গড় ৩১ শতাংশের তুলনায় বেশি ৷