প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বরাবরই ডাক্তারদের বিরুদ্ধে জেনেরিক ওষুধ (Generic Medicines) এবং ব্র্যান্ড ওষুধ নিয়ে নানা তর্ক বিতর্ক লেগেই থাকে। এমনকি এর আগে ডাক্তারদের একাংশের সঙ্গে ওষুধ সংস্থার যোগসাজশের অভিযোগ করেছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াl বা MCI। আর এই অভিযোগ দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের মধ্যে শুরু করে দিয়েছে তোলপাড়। চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকেই এই বিষয় নিয়ে ভিন্ন মতামত প্রেরণ করে। তবে এবার এই অভিযোগের জল গড়াল সুপ্রিম কোর্টে।
ওষুধের ব্র্যান্ড নিয়ে পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে
সূত্রের খবর, সম্প্রতি আদালতে ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন জমা করা হয়েছিল। এবং সেখানে দাবি করা হয় যে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলি চিকিৎসকদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দিচ্ছে, যাতে তাঁরা দামি ও ব্র্যান্ডেড ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। এর ফলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, অনেক সময় অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ প্রেসক্রাইব করার প্রবণতাও বাড়ছে, যার ফলে রোগীদের সামান্য কিছুতেই ওষুধের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। এদিকে পাল্লা দিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে। এছাড়াও তাঁরা দাবি করে শীঘ্রই চিকিৎসকদের দেওয়া উপহার বা ‘ফ্রি উপহার’ বন্ধ হওয়া উচিত।
বড় নির্দেশ আদালতের
এই পরিস্থিতিতে রোগীদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সুপ্রিম কোর্ট এক নয়া নির্দেশ দেয়। এদিন আদালতে বিচারপতিদের তরফে স্পষ্ট জানানো হয় যে দেশের চিকিৎসা খাতে ওষুধ কোম্পানিগুলোর বেআইনি ব্যবসা শীঘ্রই বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এবং এই বলা হয় যে চিকিৎসকদের শুধুই জেনেরিক ওষুধ লিখতে হবে প্রেসক্রিপশনে, কোনও ব্র্যান্ডেড ওষুধ নয়। এই রায়ে নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি সন্দীপ মেহতা। এবং তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সঞ্জয় করোল। বিচারপতি মেহতা এই নির্দেশ প্রেরণের মাধ্যমে বিশ্বাস করেন যে, “এই নির্দেশ যদি গোটা দেশে কার্যকর হয়, তবে তা বিশাল পরিবর্তন এনে দেবে।”
এর আগে, ফেডারেশন অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া -এর আইনজীবী একটি জনপ্রিয় জ্বরের ওষুধ Dolo 650 প্রস্তুতকারকের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন। যেখানে বলা হয় ওই কোম্পানি ওষুধ বিক্রির জন্য ডাক্তারদের জন্য ১,০০০ কোটি টাকার ফ্রিবি ব্যয় করেছে। আর এই অভিযোগটি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস-এর একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল। আসলে জেনেরিক ওষুধ হল সেই ওষুধ, যার রাসায়নিক গঠন ব্র্যান্ডেড ওষুধের মতোই, কিন্তু এগুলি সাধারণত অনেক কম দামে পাওয়া যায়। ব্র্যান্ডেড ওষুধের বিপণন এবং বিজ্ঞাপন ব্যয়ের কারণে তাদের দাম বেশি হয়, যা সাধারণ মানুষের উপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে।
রাজস্থানে চালু হয়েছে এই পরিষেবা
ইতিমধ্যে রাজস্থানে জেনেরিক ওষুধ লেখার নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে। সেখানকার, ডাক্তাররা ওষুধের রাসায়নিক নাম লেখান, ব্র্যান্ডের নাম নয়। যার ফলে একদিকে যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলির প্রভাব কমবে ঠিক তেমনই রোগীদের জন্য ওষুধের দাম কমিয়ে দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, এই মডেলটি জাতীয় স্তরে প্রয়োগ করা হলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়বে এবং ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের অসৎ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুনঃ শৌচাগারে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে অশান্তির ছক! বনগাঁয় ধৃত সনাতনী একতা মঞ্চের দুই সদস্য
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং সাশ্রয়ীতা আনার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জনঔষধি কেন্দ্রের মাধ্যমে জেনেরিক ওষুধের প্রচার করছে, যেখানে ব্র্যান্ডেড ওষুধের তুলনায় অনেক কম দামে ওষুধ পাওয়া যায়।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |