প্রীতি পোদ্দার, প্রয়াগরাজ: মহাকুম্ভ মেলাকে (Mahakumbh 2025) ঘিরে চলতি বছর পুণ্যার্থীদের মধ্যে এক আলাদাই আবেগ তৈরি হয়েছে। কারণ ১৪৪ বছরের পর বিরল ‘ত্রিবেণী যোগ’ পড়েছে। সেই পরিস্থিতিতে মহাকুম্ভ মেলায় ভিড়ের মাত্রাও বেশি ছিল। তার উপর মহাকুম্ভ মেলায় আজ এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ আজ মৌনী অমাবস্যা। এই বিশেষ দিনে প্রচুর মানুষ পুণ্যস্নান বা অমৃত স্নান সেরে থাকেন। আর এবার স্নান করার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গেল গঙ্গা, যমুনা, এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী— তিন নদীর সঙ্গমে।
ঘটনাটি কী?
আজ অর্থাৎ বুধবার মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে কোটি কোটি মানুষের ভিড় হয়েছিল প্রয়াগরাজে। ত্রিবেণী সঙ্গমে ‘অমৃত স্নান’ করতে একে একে জড়ো হয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। গতকাল সকাল থেকেই প্রয়াগরাজে ভিড় বাড়ছিল। সেই ভিড় দেখে প্রশাসনের তরফে বার বার ঘোষণা করা হয় যে খুব শীঘ্রই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার কথা। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলেই ঘটে বিপত্তি। পুণ্যার্থীদের অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে মেলা প্রাঙ্গণের অনেক ব্যারিকেড ভেঙে গিয়েছে। যার ফলে মঙ্গলবার মাঝরাত থেকেই বহু পুণ্যার্থী ত্রিবেণী সঙ্গমে ভিড় করতে শুরু করেন।
মৃত্যু হয়েছে অনেকের
এদিকে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই পুণ্যার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আচমকা ধাক্কাধাক্কি শুরু হওয়ায় ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়েন অনেকে। এবং রাত ২টো নাগাদ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয় একাধিক অ্যাম্বুল্যান্স। ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ সঙ্গে সঙ্গে আহতদের উদ্ধার করে মেলা প্রাঙ্গণেরই হাসপাতালে নিয়ে আনা হয়। মেলার প্রাঙ্গনের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অনেককেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আপনজনকে হারিয়ে ফেলার কারণে চারিদিক থেকে পরিবারের মানুষজনের কান্নাকাটিতে মেলার আনন্দ থমকে গিয়েছে। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাজেটেই আসবে সুখবর, দাম কমতে পারে LPG-র, কত করে মিলবে গ্যাস সিলিন্ডার?
গোটা ঘটনার পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মহাকুম্ভ মেলায় ঠিক কী হয়েছে, কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, সেইসব বিষয়ে খোঁজ নেন তিনি। যাবতীয় সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি কুম্ভমেলায় আগুন বিভ্রাট দেখা গিয়েছিল। মহাকুম্ভের ১৯ নম্বর সেক্টরে গীতা প্রেসের তাঁবু জ্বলে উঠেছিল দাউদাউ করে। তাঁবুগুলির ভিতর থেকে পর পর সিলিন্ডার ফাটার শব্দও পাওয়া যাচ্ছিল। সেখান থেকে আশপাশের কিছু তাঁবুতেও আগুন ছড়ায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫০টিরও বেশি তাঁবু।