সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: লাদাখ কদিন জ্বলেছিল বিদ্রোহের আগুনে। আর তার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুক (Sonam Wangchuk)। বর্তমানে তিনি রাজস্থানের যোধপুর জেলে বন্দী। জানা যাচ্ছে, গত 24 সেপ্টেম্বর লাদাখের রাজধানী লেহ’তে সহিংসতা চালানোর জন্যই তাঁকে আটক করা হয়েছিল। আর 26 সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের আওতায় তাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া হয়। তবে এরপর থেকেই তাঁর পরিবার আর সমর্থকরা উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছিলেন। অবশেষে তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি দেবী সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হলেন। সেখানে গিয়েই তিনি স্বামীর মুক্তির আবেদন জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টে কী বললেন গীতাঞ্জলি দেবী?
প্রসঙ্গত, এদিন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা আবেদনে গীতাঞ্জলি অভিযোগ করছেন, সোনমের গ্রেফতারি সম্পূর্ণভাবেই অবৈধ। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে। এ জন্যই তাঁকে জেলবন্দি করা হয়। লাদাখের মানুষের স্বার্থে, প্রকৃতি রক্ষার স্বার্থে তিনি লড়াই করেছিলেন। সেটাই কি অপরাধ? আমার স্বামী কখনও কারোর ক্ষতি করতে পারে না, বরং জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তিনি দেশ আর সেনাদের জন্য সেবায় উৎসর্গ করেছেন।
I have sought relief from the SUPREME COURT OF INDIA through a HABEAS CORPUS petition against @Wangchuk66’s detention.
It is one week today. Still I have no information about Sonam Wangchuk’s health, the condition he is in nor the grounds of detention. pic.twitter.com/P4EPzO630A— Gitanjali J Angmo (@GitanjaliAngmo) October 3, 2025
এমনকি ওই চিঠিতে গীতাঞ্জলিদেবী রাষ্ট্রপতিকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, দেশের বহু পাহাড়ি রাজ্য যেমন উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ বা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য লাগাম ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে ক্ষতির মুখ দেখছে। আর সেখানে দাঁড়িয়ে মানুষ আজ প্রকৃতি বাঁচানোর জন্যই রাস্তায় নেমেছিল। এতে আমার স্বামীর অপরাধটা কী, আমি বুঝলাম না।
উল্লেখ্য, লাদাখের রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তপশিলীর অন্তর্ভুক্তির দাবিতে 24 সেপ্টেম্বর লেহ শহরে প্রতিবাদ চলে। আর সেখানেই প্রশাসনের সাথে ধস্তাধস্তিতে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে মৃত্যু হয় চারজনের। এমনকি একাধিক মানুষ আহতও হয়েছে। আর ঠিক তার দু’দিন পর 26 সেপ্টেম্বর সোনম ওয়াংচুককে এনএসএ-এর আওতায় গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁকে বর্তমানে জেলবন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ দুর্গা পুজোয় ব্লু লাইনে রেকর্ড যাত্রী! কোন দিন কত ভিড়? পরিসংখ্যান দিল কলকাতা মেট্রো
নজরদারিতেও HIAL ইনস্টিটিউট
এদিকে, HIAL-র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও গীতাঞ্জলি দেবী অর্থাৎ সোনমের স্ত্রী অভিযোগ করছেন যে, তিনি এখনও পর্যন্ত সিআরপিএফ নজরদারিতে রয়েছেন। এমনকি বিশেষ তদন্তকারী দলের বিরুদ্ধেও ইনস্টিটিউটের ছাত্র-ছাত্রী আর কর্মচারীদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, ইতিমধ্যেই দুই কর্মীকে আটক করে রাখা হয়েছে। এখন তাঁর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সোনম ওয়াংচুককে মুক্তি দেয় কিনা, সেটাই দেখার।