প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে একাধিক বিতর্ক বিগত কয়েকদিন ধরে হয়েই চলেছে। এতদিন যাবৎ মোটর সাইকেল ব্যবহারের জন্যে আলাদা ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ভারী গাড়ি চালানোর জন্যে আলাদা ড্রাইভিং লাইসেন্সের আইনী নিয়ম ছিল। অর্থাৎ একটা ড্রাইভিং লাইসেন্সের মাধ্যমে কত পরিমাণ নির্দিষ্ট ওজনের গাড়ি চালানো যেত তা নিয়ে বেশ কড়াকড়ি ছিল। যার ফলে গাড়ি চালকদের বেশ সমস্যায় পড়তে হত। কারণ মোটর সাইকেলের লাইসেন্স থাকলেও চার চাকা গাড়ির জন্যে আলাদা ভাবে লাইসেন্স তৈরি করতে হত। কিন্তু এখন আর এই ঝামেলা পোহাতে হবে না। ছোট গাড়ির চালকদের জন্য বড় রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
চওড়া হাসি ছোট গাড়ি চালকদের!
জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ বুধবার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দিল, LVM অর্থাৎ হালকা মোটর যান চালকের লাইসেন্সপ্রাপ্তরা এবার থেকে পণ্যবাহী গাড়ি এবং যাত্রীবাহী ভাড়ার গাড়িও চালাতে পারবেন। তাই বলে অতিরিক্ত ওজনের নয়। সেক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া হয়েছে ওজনের সীমা। LVM অথবা লাইট ভেহিকেল মোটর লাইসেন্সধারীরা সর্বাপেক্ষা ৭,৫০০ কেজি বা ৭.৫ টনের পর্যন্ত ওজনের পণ্যবাহী গাড়ি চালাতে পারবেন। অর্থাৎ আলাদা করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে না। লাইটওয়েট ভেহিকেল চালানোর লাইসেন্স থাকলেই চলবে।
কী রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট?
এদিন আদালতে পাঁচজন বিচারপতি অর্থা প্রধান বিচারপতিৎ ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি হৃষিকেশ রায়, পি.এস. নরসিংহ, পঙ্কজ মিথাল ও মনোজ মিশ্র জানান যে সমীক্ষা অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত গোটা ভারতবর্ষে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ১.৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ কিন্তু তাই বলে কোনও তথ্যে উল্লেখ করা হয়নি যে এই দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী LVM লাইসেন্সধারীরা। তাই সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মালবাহী যানবাহন চালানোর জন্য অতিরিক্ত যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে অবশ্যই সেই মালবাহী যানবাহনগুলির ওজন ৭,৫০০ কেজির বেশি না হয়। যদি এর বেশি হয় তবে অবশ্যই লাইসেন্সের প্রয়োজন।
এর আগে ২০১৭ সালেও একইরকম মামলা উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টে, সেখানেও তখন একই রায় দিয়েছিল প্রধান বিচারপতিরা। বস্তুত সেই সিদ্ধান্তেই অনড় রইল শীর্ষ আদালত। আর এই আবহেই কেন্দ্রীয় সরকারও মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট সংশোধনে উদ্যোগী হয়েছে। তাই এই মামলার শুনানি চলাকালীনই অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমানি আদালতে জানিয়েছেন, ভেহিকেল আইন সংশোধনের কাজ প্রায় শেষ। যদিও এই সংশোধনীগুলো এখনও সংসদে পাশ করানো যায়নি।