বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দিল্লির বুকে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন আফগানিস্তানের তালিবান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। এ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। তবে শোনা যায়, সেই বৈঠকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি কোনও মহিলা সাংবাদিককে (Taliban Press Conference Controversy)। যা নিয়ে ফের উসকে গিয়েছে তালিবানের নারী বিদ্বেষ। যার কারণে বিতর্কে জড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারও। যদিও বিতর্কের মুখে শনিবার একটি বিবৃতি জারি করে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক জানায়, ‘মহিলা সাংবাদিকদের যাতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়টিতে তাদের কোনও হাত নেই।’ এমতাবস্থায়, এবার মহিলা সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করল তালিবান।
কেন বৈঠকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি মহিলা সাংবাদিকদের?
2021 সালে আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে খর্ব হয়েছে নারীদের অধিকার। শোনা যায়, আফগান দেশে প্রকাশ্য রাস্তায় স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারেন না সে দেশের মহিলারা। শুধু তাই নয়, নারীদের ক্ষেত্রে শিক্ষায়ও দাড়ি টেনেছে তালিবান সরকার। এছাড়াও, স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রেও মেয়েদের উপর রয়েছে একাধিক কঠোর নির্দেশ ও নিষেধাজ্ঞা। এবার সেই নারী বিদ্বেষী মনোভাব ফুটে উঠল দিল্লির বুকেও।
গত শুক্রবার, নয়া দিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন আফগানিস্তানের তালিবান মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। সেখানে অবশ্য মহিলা সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু কেন? প্রবল বিতর্কের আবহে এবার কারণ ব্যাখ্যা করল তালিবান সরকার। বিবিসি সূত্রে খবর, তালিবান কর্মকর্তারা নাকি শিকার করে নিয়েছেন ওই বৈঠকে মহিলা সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়ে বিবিসির সাথে কথা বলার সময় তাঁরা স্পষ্ট জানান, ‘যথাযথ সমন্বয়ের অভাবের কারণে মহিলা সাংবাদিকদের বৈঠকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।’ তবে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দিল্লিতে পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলন হলে মহিলাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
অবশ্যই পড়ুন: বিধায়ক ‘মোসারফ হোসেন হিন্দুদের ঈশ্বর!’ মন্তব্য ইটাহারের তৃণমূল নেত্রী চৈতালি ঘোষ সাহার
প্রসঙ্গত, শনিবার তালিবান মন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনে মহিলা সাংবাদিকদের ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। এ নিয়ে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এমনকি তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও একযোগে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন। বিতর্কের আবহে বিরোধী দলনেতার রাহুল গান্ধীকে বলতে শোনা যায়, ‘দিল্লির বুকে এই সম্মেলন আয়োজনের অনুমতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রতিটি মহিলাকে বুঝিয়েছেন যে আপনারা তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য দুর্বল।’ একইভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি বহু মহিলা সাংবাদিকও তালিবান মন্ত্রীর বিতর্কিত বৈঠক নিয়ে কেন্দ্রকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছেন।