প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রতিবাদের স্বরে একাধিকবার গর্জে উঠলেও বারংবার বিতর্কের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন বাংলাদেশি নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। তবে লেখালেখির জন্য ১৯৯৪ সালে নিজের দেশ, বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারপর থেকে আর নিজের দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও যে তাঁর খুব কদর ছিল তা নয়, তবে এবার তাঁর লেখা নিয়ে বড় সন্মান দিল কেরালা।
কেরালায় সন্মানিত তসলিমা নাসরিন
৬৩ বছর বয়সী তসলিমা নাসরিন একজন লেখক, চিকিৎসক, নারীবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী। কিন্তু তার লেখার মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ এবং ধর্মবিরোধী মতবাদ প্রচার করায় ইসলামপন্থীদের রোষানলে পড়তে হয় তাঁকে। তাঁকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। তাঁর কিছু বইও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু এবার তাঁর এই লেখার কৃতিত্বকে সন্মানিত করল কেরালা। গতকাল তসলিমা নাসরিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও আপলোড করেন যেখানে দেখা যাচ্ছে কেরালার একটি অনুষ্ঠানে তাকে বিশেষ সম্মানের সম্মানিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় তাঁর সাহিত্যের প্রতি এইরূপ অবদানকেও সম্মানিত করা হয়েছে। আর সেই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “সারাজীবন যে আদর্শের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লেখালেখি করলাম, যে আদর্শের কারণে দুই বাংলায় নিষিদ্ধ হলাম, দুই বাংলা থেকে বিতাড়িত হলাম, সেই একই আদর্শের জন্য কেরালা নামের রাজ্যে আমি সম্মানিত হলাম।”
The ideal for which I risked my life to write — the ideal that led to my being banned in both Bengals and exiled from my homeland — has now been honored in Kerala. pic.twitter.com/6MwO8ViJHh
— taslima nasreen (@taslimanasreen) October 20, 2025
আরও পড়ুন: সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি মৃত্যু মামলায় সৎমা ও বাবাকে বেধড়ক মারধর! উঠল গুরুতর অভিযোগ
বরাবরই প্রতিবাদী তসলিমা
এদিকে তসলিমা নাসরিনের এই ভিডিও পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই কমেন্ট বক্সে উপচে পড়ে একাধিক নানাবিধ মন্তব্য। অনেকেই সেখানে যেমন বাংলাদেশি নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঠিক তেমনই আবার লেখিকার কাজ নিয়েও কটাক্ষ করেছেন। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের শিল্পী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও যশ রোহান হিন্দু জানার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। আর এই ধর্ম বিদ্বেষকেই একহাত নিয়েছেন লেখিকা। ফেসবুকে করেছিলেন এক লম্বা পোস্ট। যেখানে তসলিমা নাসারিন লিখেছেন, “চঞ্চল চৌধুরীকে তারা ভালবেসেছিল। কারণ চঞ্চলের অভিনয় তাদের ভাল লেগেছিল। চঞ্চলের গানও ভাল লেগেছিল তাদের। তারপর যখন ফেসবুকে চঞ্চলের ছবি দেখলো তাঁর মায়ের সঙ্গে, যে মায়ের সিঁথিতে ছিল সিঁদুর, তখনই চঞ্চলের প্রতি যত ভালবাসা ছিল উইথড্র করে নিল। এরপর যশ রোহান যখন ছবি পোস্ট করলো দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে, কপালে তিলক বা সিঁদুর। তারা তুই-তোকারি করতে লাগলো যশকে, এই হলো বাংলাদেশের একটা বড় সংখ্যক মুসলমানের চরিত্র!” তা নিয়েও বেশ তর্ক বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি।