সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতীয় সামরিক বাহিনীর মুকুটের নয়া পালক। সেনাদের এয়ার ডিফেন্স শাখা এবার আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তশস্ত্র (Anantshastra) নামের নতুন কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম চালু করতে চলেছে। আর এটি শুধুমাত্র কোনও ক্ষেপণাস্ত্র নয়, বরং এই সিস্টেম ভারতের রণক্ষেত্রের সংজ্ঞাকেই বদলে দেবে। এটি এমন এক সুরক্ষা ছাতা হিসাবে কাজ করবে, যেখানে শত্রুপক্ষের বিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন হামলা সবকিছু নিমেষের মধ্যে গুঁড়িয়ে যাবে।
কী এই অন্তশস্ত্র?
অন্তশস্ত্র আসলে সেনাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যুদ্ধক্ষেত্রের ট্যাংক থেকে শুরু করে কামান, ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকেল কিংবা বিভিন্ন মেগানাইজড ইউনিটগুলিকে আকাশপথের হুমকি থেকে এই অস্ত্র রক্ষা করবে। ফলে শত্রুপক্ষের বিমান হামলা, হেলিকপ্টার, রকেট আক্রমন বা ড্রোন হামলা, সবকিছুর জবাব দিতে পারবে এই ব্যবস্থা।
পরিকল্পনামা অনুযায়ী, এটি মোট 9টি ইউনিট তৈরি করা হবে, যেখানে মোট 36টি মিসাইল এবং 36টি রাডার সিস্টেম থাকবে। আর এই প্রকল্পের জন্য 30 হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে। এর মাধ্যমে তিনটি পূর্ণাঙ্গ রেজিমেন্ট গড়ে তোলা হবে। সেনাদের ইতিহাসে এটিই সাম্প্রতিক সময়ের সবথেকে বড় এয়ার ডিফেন্স উদ্যোগ হতে চলেছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে কী কাজ করবে অন্তশস্ত্র?
উল্লেখ্য, যুদ্ধক্ষেত্রে 10 কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতার মধ্যে যেকোনও আকাশ হামলা বিপজ্জনক। আর এখান দিয়ে সাধারণত শত্রুর বিমান বা হেলিকপ্টার নীচে নেমেই আক্রমণ চালায়। এমনকি ড্রোন টার্গেট খোঁজে। আর অন্তশস্ত্র সেই জায়গাতেই ঢাল হিসেবে কাজ করবে। ফলে সেনারা এবার আকাশ হামলার ভয় ছাড়াই সামনের দিকে এগোতে পারবে। এমনকি ডিআরডিও, বিইএল এবং বিডিএল-এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই সিস্টেম সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। কোনও বিদেশী প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল নয়। ফলে মরুভূমি থেকে পাহাড় বা সমতল ভূমি, সব পরিবেশেই এটি কার্যকর হবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলার বুকে তৈরি হবে জুবিনের মূর্তি, বিরাট উদ্যোগ নিল কোচবিহার পৌরসভা
অন্তশস্ত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
প্রসঙ্গত, অন্তশস্ত্র শত্রুপক্ষের হুমকিকে 30 থেকে 40 কিলোমিটার দূর থেকে গুঁড়িয়ে দিতে পারবে। পাশাপাশি এটিকে 8×8 হাই-মোবিলিটি ভেহিকেলে স্থাপন করা হবে। এমনকি 360 ডিগ্রি নজরদাড়ি রাডার ও স্বয়ংক্রিয় কমান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে এতে, যা শত্রুপক্ষের আক্রমণের চেষ্টাকে প্রতিহত করতে পারবে। তবে প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, তিন রেজিমেন্টের অন্তশস্ত্র ভারতের পশ্চিম এবং উত্তর সীমান্তেই স্থাপন করা হবে, যাতে পাকিস্তান বা চিন সীমান্তে মোতায়েন সেনাদের উপর শত্রুপক্ষের বিমান হামলার আর কোনওরকম সুযোগ না থাকে।