বিশ্বের সবথেকে বিপজ্জনক ও সুন্দর! এবার ভারতীয় রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে এই রেলপথ

Published on:

Indian Railways

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দুর্গম পাহাড়ি এলাকা, গভীর উপত্যকা আর বন্যপ্রাণীতে ঘেরা অঞ্চল, এই সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়েই গড়ে উঠেছিল ভারতের এই রেলপথ (Indian Railways)। দেশের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে অবস্থিত এই রেলপথটি এখনও বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ ও সুন্দর রেলপথ হিসেবেই পরিচিত। হ্যাঁ, আমরা বলছি কোঙ্কণ রেলওয়ের কথা। অবশেষে 27 বছর পর এই রেলপথ ভারতীয় রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

একনজরে কোঙ্কণ রেলওয়ে

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কোঙ্কণ রেলওয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে। অর্থাৎ, 1990 সালে। দীর্ঘ 8 বছর নির্মাণকার্য শেষ হওয়ার পর 1998 সালের 26 জানুয়ারি প্রথমবার এই লাইনে ট্রেনের চাকা গড়ায়। এমনকি এই রেললাইন 741 কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল মহারাষ্ট্রের লোহা থেকে কর্নাটকের থোকুর পর্যন্ত, যার মধ্যে গোয়াও রয়েছে। অর্থাৎ, এই লাইনের মধ্যে মূলত তিনটি রাজ্য মহারাষ্ট্র, গোয়া এবং কর্ণাটক এক্কেবারে এক সুতোয় বেঁধে গিয়েছে।

নির্মাণের পিছনে ভয়ংকর পাঁচ চ্যালেঞ্জ

তবে এই রেলপথ নির্মাণ কিন্তু এতটাও সহজ ছিল না। বিভিন্ন বাধা-প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এই রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছিল। বাধাগুলির মধ্যে রয়েছে-

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

পাহাড় কেটে পথ

পশ্চিমঘাটের দুর্গম পাহাড়, জলভর্তি উপত্যকা, কাদাযুক্ত পাথরের জমিতে রেললাইন বসানো কার্যত দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল। সে সময় 160 কিমি./ঘন্টা গতির ট্রেন চালানোর উপযোগী রেললাইন তৈরি করতে হয়েছিল। আর যার জন্য 2116 টি সেতু এবং 52 টি সুড়ঙ্গ খনন করতেও হয়েছিল। এমনকি সবথেকে বড় সুড়ঙ্গটি রত্নাগিরির কাছে রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য 6.561 কিলোমিটার।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা

এই রেলপথ নির্মাণের জন্য সবথেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কারণ তীব্র বর্ষার কারণে প্রায়শই ভূমিধ্বস এবং জল জমে অবস্থা আরও বিপাকে পড়তো। বিশেষ করে নরম মাটিতে সুড়ঙ্গ খননের সময় বহু শ্রমিক প্রাণও দিয়েছেন।

বন্যপ্রাণীর উৎপাত

ঘন জঙ্গলে কাজ করার সময়ই বিভিন্ন বন্যপ্রাণী যেমন হরিণ, হাতি, এমনকি বাঘের মতো প্রাণীদেরও উৎপাত লক্ষ্য করা যেত, যা সব সময় আতঙ্কের পরিবেশ বানিয়ে রাখত।

জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া

এই রেলপথ নির্মাণের জন্য প্রায় 43 হাজার জমির মালিকের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছিল। আর যা সম্পন্ন করতেই প্রায় 1 বছর সময় কেটে যায়।

নির্ধারিত সময়সীমা

সূত্র বলছে, এই প্রকল্পটি নির্মাণ করার জন্য সরকার সময় সীমা বেঁধে দিয়েছিল মাত্র চার বছর। আর এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পিয়ার নির্মাণ ও ক্রেন দিয়ে সেতু নির্মাণের মতো প্রযুক্তিও ভারতের মাটিতে প্রথমবার ব্যবহার করা হয়।

এই রেলপথ নির্মাণের নায়ক কে ছিল?

বেশ কয়েকটি সূত্র মারফত জানা গেল, এই অসাধ্যকে সাধন করেছিল ভারতের অন্যতম খ্যাতনামা রেল ইঞ্জিনিয়ার ই. শ্রীধরন, যাকে সবাই মেট্রো ম্যান নামেই চিনে থাকে। তার নেতৃত্বেই এই কোঙ্কণ রেলওয়ের যাত্রাপথ সম্পন্ন হয়।

সূত্র বলছে, বর্তমানে এই লাইনে প্রতিদিন প্রায় 50 টির বেশি ট্রেন চলাচল করে। তার মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, কোঙ্কণ কন্যা এক্সপ্রেস, মান্দোভী এক্সপ্রেসের মত জনপ্রিয় ট্রেনগুলোও রয়েছে। এছাড়াও মালবাহী কিছু ট্রেন বা ট্রাকবাহী রোলো-অন/রোলো-অফ সার্ভিস চালু রয়েছে এই রুটে। 

আরও পড়ুনঃ ধার শোধ করতে গিয়েই ফিরল ভাগ্য! ৬ টাকার লটারিতেই কোটিপতি ফাস্ট ফুড বিক্রেতা গোপাল

কোঙ্কণ রেলওয়ে নিয়ে নতুন দিশা

সবথেকে চমক দেওয়ার বিষয় হল – সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার কোঙ্কন রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেডকে ভারতীয় রেলের সঙ্গে জুড়ে দিতে চলেছে। হ্যাঁ, মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত মিলেছে। আর এই সংযুক্তির ফলে রেল পরিষেবা যে আরো উন্নত হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একই সঙ্গে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং পরিকাঠামগত উন্নয়নও হবে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
Join Group