প্রীতি পোদ্দার: ভারতের সবচেয়ে ধনী মন্দিরের তালিকায় অন্যতম হল দক্ষিণ ভারতের তিরুপতি মন্দির। চলতি বছরে এক হাজার কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছে এই মন্দিরের ট্রাস্ট। আর এই মন্দিরের সোনার পরিমাণ প্রায় কয়েকশ কোটিরও বেশি। অন্যদিকে প্রসাদি লাড্ডুর জন্য প্রতি ৬ মাস অন্তর তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ ঘি-এর টেন্ডার ডাকেন। এবং ৫ লক্ষ কেজি ঘি কেনেন প্রতি বছর। তবে এবার এই লাড্ডু নিয়েই শুরু হল বড় বিতর্ক।
ভয়ংকর অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর !
জানা গিয়েছে, গত বুধবার, টিডিপি প্রধান ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু অভিযোগ করেন যে জগনমোহন রেড্ডির শাসনকালে বিখ্যাত তিরুপতির শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে নাকি গরুর চর্বির সঙ্গে ব্যবহার করা হত মাছের তেল। কিন্তু এই ঘটনা সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়েছে হবে থেকে তিনি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছেন। বর্তমানে এখন লাড্ডু তৈরি হয় খাঁটি ঘি দিয়ে। চন্দ্রবাবুর এই ভয়ংকর অভিযোগের পরমুহুর্তেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়।
গত ৯ জুলাই গুজরাটের সেন্টার ফর অ্যানালিসিস অ্যান্ড লার্নিং ইন লাইভস্টক অ্যান্ড ফুড নামের একটি সরকারি ল্যাবে এই লাড্ডু পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এরপর গত ১৬ জুলাই ল্যাবরেটরির রিপোর্ট বলছে, তিরুপতির লাড্ডুতে ব্যবহার করা ঘি-তে মাছের তেল, গোরু ও শুয়োরের চর্বি পাওয়া গিয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ভক্তকে বিতরণ করা হয় এই লাড্ডু। তাইতো সেখানে এই ধরনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ গোটা রাজ্য।
এই প্রসঙ্গে আমুলের বিবৃতি
এদিকে এই বিতর্কের মাঝেই তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদে আমুল এর প্রসঙ্গ উঠে আসতেই জবাবে এক অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশ করে আমুল। সেই সংস্থার বক্তব্য, “সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করা হচ্ছে তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানমে আমুল ঘি সরবরাহ করেছে। কিন্তু আমরা জানাতে চাই, কখনওই সেখানে ঘি সরবরাহ করা হয়নি। আমরা ‘স্টেট অফ দ্য আর্ট’ উৎপাদন ব্যবস্থায় ঘি প্রস্তুত করি। যা ISO সার্টিফিকেট প্রাপ্ত। বিশুদ্ধ মিল্ক ফ্যাট থেকে উচ্চ গুণমানের ঘি প্রস্তুত করা হয়। তার জন্য একাধিকবার ল্যাবে ঘি-য়ের গুণমান পরীক্ষা করা হয়।”
YSR কংগ্রেস সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষের
অন্যদিকে লাড্ডু বিতর্কে গুজরাটের ল্যাবের এই বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ একটি প্যানেল গঠন করেছে। যেখানে সরাসরি YSR কংগ্রেস সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে। তবে এই বিতর্কে চুপ করে থাকেনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহনের দল YSR কংগ্রেস। দলের সাংসদ সুব্বা রেড্ডি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, ‘চন্দ্রবাবু নোংরা রাজনীতি করছেন। তিনি ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর কোটি কোটি ভক্তের ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছেন।’ এমনকি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন জগনমোহন রেড্ডি।
তবে চন্দ্রবাবুর পক্ষ নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী নারা লোকেশ জানিয়েছেন, “তিরুমালার ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির আমাদের রাজ্যের সবচেয়ে পবিত্র। জগনমোহন রেড্ডির সরকার তিরুপতির বিখ্যাত লাড্ডু প্রসাদমে ঘি-র পরিবর্তে পশুর চর্বি ব্যবহার করেছিল জানতে পারে আমি হতবাক হয়ে গেছি।”
অন্যদিকে এই আবহে আবার উঠে এসেছে অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রসঙ্গ। PTI সূত্রের খবর অনুসারে জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জগন্মোহন রেড্ডি নাকি এই বিতর্কিত লাড্ডু প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য বিশিষ্টদের উপহার হিসেবে দিয়েছেন। এবং গত পাঁচ বছরে তিনি যতবার দিল্লি গিয়েছেন, এই লাড্ডু প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিয়ে গিয়েছেন। এমনকী এই বছরের শুরুতে রাম মন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা উৎসবের সময়ও এক লক্ষ লাড্ডু অযোধ্যায় পাঠানো হয়েছিল।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |