সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বালির নীচে লুকিয়ে ছিল ঐতিহাসিক স্তূপ! আর সেই স্তূপ সরাতেই উঠে আসলো বিস্ময়কর রহস্য! রাজস্থানের (Rajasthan) দীগ জেলার বাহাজ গ্রামে সম্প্রতি প্রত্নতাত্ত্বিক খননে 4500 বছর আগের এক প্রাচীন সভ্যতার হদিশ মিলেছে। শুধু তাই নয়, এই সভ্যতার সঙ্গে ঋকবেদের পৌরাণিক সরস্বতী নদীরও সম্ভাব্য সংযোগ রয়েছে বলে মনে করছে বেশ কিছু প্রত্নতত্ববিদ।
23 মিটার গভীরেই মিলল সরস্বতীর চিহ্ন
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট মারফত খবর, 2024 সালের 10 জানুয়ারি থেকে শুরু হয় এই খনন কাজ। রাজস্থানের মধ্যে এটিই ছিল সবথেকে গভীর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন। খননের নেতৃত্ব থাকা এএসআই আধিকারিক পবন সরস্বত জানিয়েছেন, 23 মিটার গভীরতায় একটি প্রাচীন চ্যানেল বা নদী প্রবাহের পথ ধরা পড়েছে, যা বহু পুরনো সরস্বতী নদীর সম্ভাব্য প্রমাণ হিসেবেই মনে করা হচ্ছে।
ইতিহাস বলছে, এই নদী প্রবাহ একসময় মানব সভ্যতার জন্ম দিয়েছিল। সেই সঙ্গে এটি মথুরা এবং ব্রজ অঞ্চলগুলিকে যুক্ত করেছিল বৃহত্তর সেই সরস্বতী সভ্যতার সঙ্গে। এমনটাই খবর পাওয়া যাচ্ছে বেশ কয়েকটি তথ্য থেকে।
রয়েছে হরপ্পা থেকে গুপ্ত যুগ পর্যন্ত ছাপ
এই খননে উঠে এসেছে পাঁচটি ভিন্ন সময়ের তথ্য। আর সেগুলি হল—হরপ্পা পরবর্তী যুগ, মহাভারতের সময়কাল, মৌর্য যুগ, কুষাণ যুগ এবং গুপ্ত যুগ। এমনকি এই অঞ্চলে পাওয়া গিয়েছে ৮০০-র বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নবস্তু, যার মধ্যে ব্রাহ্মি লিপি, প্রাচীন সিল, মাটির পাত্র, তাম্র মুদ্রা, মৌর্য যুগের মূর্তি, হাড়ের উপকরণও মিলেছে।
রয়েছে মহাভারতের সময়কার চিহ্ন
প্রাপ্ত মাটির পাত্রে আগুনের চিহ্ন এবং রঙিন বৃত্তাকারে আঁকা চিত্র দেখে প্রত্নতত্ত্ববিদরা দাবি করছে যে, এগুলি মহাভারত যুগের হবন কুণ্ড, বা যজ্ঞের পাত্রও হতে পারে। আর সেই সঙ্গে প্রাচীন পোশাক এবং বাসনের মতো কিছু চিহ্নও মিলেছে, যা কিনা মহাভারতের বর্ণনার সঙ্গে একেবারে অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে।
সবথেকে বড় ব্যাপার, একটি ভাঙ্গা মূর্তির অংশ পাওয়া গিয়েছে, যেটিকে মৌর্য যুগের মাতৃদেবির মাথা বলে মনে করছেন বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। একইসঙ্গে ধরা পড়েছে গুপ্ত স্থাপত্যশৈলীর খুঁটি এবং দেওয়ালের ছাপ, যা গুপ্ত যুগের গঠনশৈলীর প্রমাণ একেবারে হাতেনাতে দিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ‘ভারত এবার হামলা করলে ভয়ঙ্কর জবাব দেব!’ ফের হুঙ্কার ছাড়লেন আসিম মুনির
রয়েছে হাড়ের কঙ্কাল
তবে এই খনন কার্যে সবথেকে চমক দেওয়া আবিষ্কারের মধ্যে একটি হলো—মানবদেহের কঙ্কাল, যা পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে ইজরাইলে পাঠানো হয়েছে। আর গবেষকরা মনে করছে যে, এই কঙ্কাল বিশ্লেষণ করলে সভ্যতার জীবনধারা, খাদ্যাভাস এবং রোগবালাই সম্পর্কে সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে রাজস্থানের এএসআই প্রধান বিনয় গুপ্ত দাবি করেছেন যে, এই খনন শুধুমাত্র রাজস্থানের ইতিহাসে নয়, বরং গোটা ভারতের ইতিহাসকে নয়া উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আর খুব শীঘ্রই এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানো হবে। এমনকি এই অঞ্চলকে জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষিত অঞ্চল হিসেবে ভবিষ্যতে ঘোষণা করা হবে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |