জয়পুরঃ প্রাচীনকাল থেকেই ভারত খনিজ সম্পদের একটি বিশাল ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। কয়লা, লোহা, বক্সাইট, তামা, সোনা, চুনাপাথর, মিকা, এবং জিপসামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পাওয়া যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে, বিশেষ করে ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, এবং ছত্তিশগড়ে প্রধানত লোহা ও কয়লার খনি রয়েছে। রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে পাওয়া যায় চুনাপাথর ও বক্সাইট। দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে এসব খনিজ সম্পদের বিশাল অবদান রয়েছে।বিশেষ করে ভারী শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন, এবং নির্মাণ খাতে এইসব খনিজ বড় ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম মিকা উৎপাদক দেশগুলির মধ্যে একটি, যা ইলেকট্রনিক্স এবং প্রসাধনী শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
এবার রাজস্থানের ১২টি জেলায় বিরল খনিজ পদার্থের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে এর ফলে অন্যান্য দেশের উপর ভারতের নির্ভরতা ৯৫ শতাংশ কমে যাবে। সেই সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। জানা গেছে, খনিজগুলির সন্ধানের জন্য, রাজস্থানে একটি আর্থ এলিমেন্ট এক্সিলেন্স সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই সংস্থা মাধ্যমে খনিজগুলি অনুসন্ধান করা হবে। এতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে।
রাজস্থানের কোন কোন জেলায় রয়েছে এই রত্নভান্ডার?
বর্তমানে রাজস্থানের বারোটি জেলায় এইসব মূল্যবান খনিজ রয়েছে বলে জানা গেছে। বারমের, জালোর, সিরোহি, পালি, উদয়পুর, ভিলওয়ারা, নাগৌর, আজমির, জয়পুরের নিমকাথানা, রাজসমন্দ, সিকর এবং বাঁশওয়ারা জেলায় এইসব খনিজ মজুত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কি কি খনিজ থাকতে পারে এইসব জেলায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, কার্বোনাইট এবং মাইক্রোগ্রানাইট শিলায় বাস্তানাসাইট, ব্রিটোলাইট, সিঙ্কাইসাইট এবং জেনোটাইম থাকতে পারে। এইসব পদার্থগুলি যেকোনও দেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারে।
এইসব খনিজ পাওয়া গেলে কি হতে পারে?
আগামী দিনে সন্ধানে যদি খনিজ পাওয়া যায়, তাহলে সেগুলোতে ব্যবহৃত জিনিস তৈরির জন্য একটি কারখানাও তৈরি করা হবে। এতে শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়বে। বলা হচ্ছে খনিজ পদার্থ থেকে ব্যাটারি, লেজার ব্যাটারি ইত্যাদি তৈরি করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব খনিজ পাওয়া গেলে চীনের ওপর দেশের নির্ভরতা ৯৫ শতাংশ কমে যাবে। এর পাশাপাশি দেশে কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাতকরণও শুরু হবে। এর ফলে আরো উন্নততর হবে দেশের অর্থনীতি।