বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আতঙ্কের নাম রহিত আর্য (Rohit Arya)। বৃহস্পতিবার দুপুরে মুম্বইয়ের 17 জন শিশুকে পণবন্দি করে শেষ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে রোহিত চলে গেলেও রেখে গিয়েছেন একরাশ প্রশ্ন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশুদের অপহরণের সময়কার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই শোরগোল পড়েছে। ওই ভিডিওটিতে হুমকি সহযোগে রোহিতকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি কোনও জঙ্গি নই। টাকা পয়সাও চাইনা।’ মূলত এমন আজব দাবি করেও কেন শিশুদের অপহরণ করেছিলেন তিনি, সে প্রশ্নটা যখন নেট নাগরিকদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, ঠিক তখনই পুলিশের হাতে এনকাউন্টার হন আর্য। কিন্তু কী তাঁর পরিচয়? জানতে নেট দুনিয়ায় হন্যে হয়ে খোঁজ চালাচ্ছেন কৌতুহলীরা।
কে ছিলেন রোহিত আর্য?
হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদন ঘেঁটে জানা গেল, রোহিত ছিলেন পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। নেশায় অবশ্য ইউটিউব চ্যানেল চালাতেন তিনি। সেটাই ছিল তাঁর অন্যতম প্যাশন। যেটুকু যা জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসারকারের উপর বেজায় ক্ষিপ্ত ছিলেন তিনি। আসলে রোহিতের অভিযোগ ছিল, স্বচ্ছতা অভিযানে মহারাষ্ট্রে একটি বিশেষ প্রকল্প চালু করে সরকার। সেই প্রকল্পের অধীনে 2 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। তিনিও কাজ করেছিলেন সেই প্রকল্পে। তবে শেষে কানা-করিও হাতে পাননি। প্রশাসনে অভিযোগ জানিয়ে লাভ না হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত অনশনেও বসেন রোহিত। তবে কাজের কাজ হয়নি। তাই ঠিক করেছিলেন ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করবেন। এখান থেকেই পড়ুয়াদের অপহরণের ছক।
অভিনব কায়দায় অপহরণ রোহিতের
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কুল পড়ুয়াদের অপহরণ করার জন্য এক বিশেষ উপায় ভেবেছিলেন রোহিত। ঠিক করেন, ওয়েব সিরিজে অডিশনের নাম করে পড়ুয়াদের ডাক পাঠাবেন তিনি। যেমন ভাবা কেমন কাজ। একটি ওয়েব সিরিজে অডিশনের কথা বলে প্রায় 100 জন শিক্ষার্থীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রোহিত। পরবর্তীতে তাঁরা মাস্টারমশাইয়ের কথা মেনে পৌঁছলে 83 জনকে ছেড়ে দিয়ে বাকি 17 জনকে বন্দি করেন পেশায় শিক্ষক প্রয়াত রোহিত।
অবশ্যই পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্বাচিত সূর্যকান্ত, কবে শপথ?
সূত্রের খবর, ওই 17 জন পড়ুয়া ছাড়াও আরও 2 থেকে তিন জনকে বন্দি করা হয়েছিল। জানা যায়, মহারাষ্ট্রের পোয়াইয়ের আরএ স্টুডিওর নিচের ফ্লোরে তাঁদের সকলকে আটকে রেখেছিলেন রোহিত। সেই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন তিনি। এদিন কচিকাঁচারদের আটকে রেখে ভিডিও বার্তায় প্রশাসনকে সরাসরি হুমকি দেন ওই ব্যক্তি। ভিডিওটিতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, , ‘তাঁর কথার অন্যথা বা সামান্যতম ভুল হলে পড়ুয়াদের চরম পরিণতি হবে।’ এদিন মূলত প্রত্যেক পড়ুয়াকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন রোহিত। সেই ভিডিও দেখার পরই তৎপর হয় প্রশাসন। শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে ময়দানে নামে বিরাট পুলিশ বাহিনী। শেষ পর্যন্ত তাঁদের গুলিতেই খেল খতম হয় মহারাষ্ট্রের শিক্ষকের।












