সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দেশের সামগ্রিক বেকারত্ব কমলেও মহিলাদের কর্মসংস্থান (Women Unemployment) বর্তমানে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সদ্য প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারের পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে অনুযায়ী জানা গিয়েছে, শহর অঞ্চলের তরুণীদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেড়ে ২৫.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। একই বয়সের পুরুষদের তুলনায় এই হার প্রায় ১০ শতাংশ বেশি।
মহিলাদের ক্ষেত্রে অন্ধকারের ছায়া
জানা গিয়েছে, আগস্ট মাসে দেশের সার্বিক বেকারত্ব নেমে এসেছিল ৫.১% শতাংশে। জুলাই মাসে এই হার ছিল ৫.২ শতাংশ। অর্থাৎ কাজের সুযোগ সামান্য হলেও বেড়েছে। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ছবি সম্পূর্ণ উল্টো। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, এই প্রবণতা চলতে থাকলে ভবিষ্যতের শ্রমবাজারে পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে বিরাট ফারাক সৃষ্টি হবে।
গ্রাম এবং শহরে একই হাল
রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, গ্রামীণ এলাকাতে তরুণীদের কর্মসংস্থানের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। আগস্টে যেখানে গ্রামীণ যুবকদের মধ্যে বেকারত্ব ১২.৬ শতাংশে নেমে এসেছিল, সেখানে তরুণীদের মধ্যে বেকারত্ব পৌঁছে গিয়েছে ১৪.৩ শতাংশে। অর্থাৎ শহর কিংবা গ্রাম, মেয়েরা চাকরির বাজারে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, প্রতিবছর ২ কোটি চাকরি হবে। তবে এক দশক কেটে গেলেও বেকারত্বের সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে বাড়ছে। বিরোধীরা অভিযোগ করছে, সরকারের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র নির্বাচনের স্লোগানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
ভরসা বাড়ছে ১০০ দিনের কাজে
এদিকে গ্রামীণ মহিলাদের মধ্যে সরকারি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে যোগদানের হার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, এটি বেকারত্বের বৃদ্ধির সম্পূর্ণ প্রতিফলন। তাদের বক্তব্য, কর্মসংস্থানে মহিলাদের পিছিয়ে পড়া শুধুমাত্র অর্থনীতির জন্য নয়, বরং সমাজের জন্যও উদ্বেগের বিষয়।
আরও পড়ুনঃ নবম-দশম নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রকাশ করল SSC! কবে থেকে শুরু হবে চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়া?
এদিকে গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল যে কৃষি, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মহিলাদের কর্মসংস্থান ৪১.৫ শতাংশ ছিল, যা ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে নেমে ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ফলে মহিলাদের মধ্যে যে বেকারত্ব বাড়ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।