বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মালয়েশিয়ায় (Malaysia) 130 বছরের পুরনো ঐতিহাসিক হিন্দু মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরির পরিকল্পনা! হ্যাঁ, সম্প্রতি এমন খবরই উঠে আসছে নানা মহল থেকে। শোনা যাচ্ছে, রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থিত দেবী পাত্র কালিম্বার উদ্দেশ্যে নিবেদিত বহু প্রাচীন মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরির পরিকল্পনা করছে মালয়েশিয়ার সরকার।
মুসলিমদের উপহার দিতেই নয়া পরিকল্পনা
বেশ কিছু সূত্র মারফত খবর, মালয়েশিয়ায় দেবী শ্রী কালিম্বার উদ্দেশ্যে নিবেদিত এবং বহু প্রজন্ম ধরে ভক্তদের বিশ্বাসের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু মন্দিরটি প্রথমদিকে সরকারি জমিতে তৈরি করা হয়, তবে পরবর্তীতে 2014 সাল নাগাদ টেক্সটাইল কোম্পানির কাছে জমিটি কাছে বিক্রি করে দেওয় হয়। ওই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মোহাম্মদ জাকিল জমিটিতে মসজিদ তৈরি করে মুসলিমদের উপহার দিতে চেয়েছিলেন।
সূত্র বলছে, এবার সেই উদ্দেশ্য পূরণেই কোমর বেঁধেছে টেক্সটাইল সংস্থা। জানা যাচ্ছে, সংস্থাটির তরফ ইতিমধ্যেই মন্দিরটি ভেঙে অন্যত্র কোথাও মন্দির তৈরির কথা বলা হয়েছে। কোম্পানি জানিয়েছে, তারা যত দ্রুত সম্ভব এখানে মসজিদ তৈরি করতে চায়। সূত্রের খবর, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীও নাকি সেই মসজিদ উদ্বোধনের জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।
মন্দির স্থানান্তরের খরচ দেবে কোম্পানি
মালয়েশিয়ার বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, জালিকের সংস্থা টেক্সটাইল মন্দির কমিটির সাথে প্রতিমুহূর্তে মন্দিরটির স্থানান্তরের বিষয়ে কথা বলছে। জানা গিয়েছে, মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করার আগে বহু প্রাচীন মন্দিরটি অন্য জায়গায় স্থানান্তরের খরচও দিতে রাজি হয়েছে সংস্থা। উল্লেখ্য, শেষবারের মতো 2011 সালে সংস্থাটি মসজিদ নির্মাণের অনুমতি পায়। তবে জমিতে ইতিমধ্যেই মন্দির থাকায় তা নিয়ে জটিলতার কারণে মসজিদ নির্মাণের কাজ স্থগিত ছিল।
তবে, সূত্র বলছে, নতুন করে নিজস্ব জমিতে মসজিদ তৈরির চূড়ান্ত অনুমতি পেয়ে গিয়েছে কোম্পানিটি। জানা যাচ্ছে, আগামী 27 মার্চ, বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মন্দির সরিয়ে সেখানে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
মসজিদ তৈরিকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মালয়েশিয়ায় ধর্মীয় সমতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্ক নতুন করে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে এই মসজিদ তৈরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে। জানা যাচ্ছে, হিন্দু মন্দির সরিয়ে সেখানে মুসলিমদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির পরিকল্পনার কারণে ইতিমধ্যেই জনসাধারণের ক্ষোভের মুখে পড়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। লয়ার্স ফর লিবার্টি সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিচালক জায়েদ মালিক সরকারের এই সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করেছেন।
অবশ্যই পড়ুন: দিল্লির ম্যাচে ব্যর্থতার জের, মালিক গোয়েঙ্কার জেরার মুখে ঋষভ পন্থ?
তিনি জানিয়েছেন, জাকিল সংস্থা ও পৌরসভার মধ্যে এখনও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে, তাহলে এত তাড়াহুড়ো কেন? ওই কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ শানিয়ে বলেন, মসজিদ তৈরির থেকেও মন্দিরটি অপসারণ করাই প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম লক্ষ্য। আর সেই কারণে তড়িঘড়ি মসজিদের উদ্বোধন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।