বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: স্থলপথে বাংলাদেশি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। আর এই এক সিদ্ধান্তেই কার্যত ভেঙে পড়ল ওপার বাংলার (Bangladesh) বস্ত্র বাণিজ্য শিল্প! সূত্রের খবর, ভারতে পোশাক রপ্তানি করতে না পেরে একপ্রকার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পদ্মা পাড়ের পোশাক নির্মাতারা। ক্ষতি যে হচ্ছে, তা এখন সর্বসমক্ষে উন্মোচিত।
ভারতের এই কড়া নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিস্থিতির বদল না হলে আগামী দু এক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের 50 শতাংশ টেক্সটাইল ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ওপার বাংলার টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সালেউদ জামান খান।
বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশের একাধিক বস্ত্র কারখানা
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, রবিবার সে দেশের রাজধানী ঢাকার গুলশান ক্লাবে এক যৌথ সংবাদসম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওপার বাংলার টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামান বলেন, সরকার বলছে 7 তারিখের মধ্যে সমস্ত শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন দিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় অ্যাকশন নেবে তারা। সেক্ষেত্রে একজন শিল্প মালিক যদি শ্রমিকদের কাজ না করিয়ে প্রতিমাসে মোট 15 কোটি টাকা দিয়ে দিতে হয়, তাহলে আমাদের মতো ফ্যাক্টরি মালিকরা কোথায় যাবেন?
জামান আরও বলেন, এমনিতেই গত 5 থেকে 6 মাস যাবত শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। গ্যাস কোম্পানিগুলি গ্যাস সাপ্লাই না করেই বিল দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে আমাদের মতো ফ্যাক্টরিতে 10 কোটি টাকা গ্যাসের বিল দিতে হচ্ছে, কোনও রকম গ্যাস ব্যবহার ছাড়াই। এদিকে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে 7 ঘন্টা লোডশেডিং চলে। একটা ফ্যাক্টরিতে প্রতিদিন অন্তত 5 থেকে 6 বার বিদ্যুৎ চলে যায়।
এখন আমি জানতে চাই, এমন দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে কীভাবে বাংলাদেশের শিল্প ও মালিকরা টিকে থাকবেন। এরপরই টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের ওই সভাপতি জানান, কারোর যদি পৈত্রিক সম্পত্তি থাকে তাহলে সে পরবর্তীকালে সেই জায়গা বিক্রি করে ব্যবসা করতে পারবেন, কিন্তু আজকে যে শিল্প-মালিকরা মারা যাবে, বাংলাদেশের শিল্প ও মালিক উদ্যোক্তা আর হবে না। আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে সব।
অবশ্যই পড়ুন: ব্রডব্যান্ড অতীত! ১০০০ টাকার কমে ভারতে আনলিমিটেড ডেটা দেবে Starlink, কবে থেকে?
সালেউদের শেষ সংযোজন, ব্যাঙ্কের সুদের হার বর্তমানে 14 থেকে 15 শতাংশ হয়েছে। আগে যেখানে আমরা 3 শতাংশ দিতাম। এখন আপনারাই বলুন, কীভাবে বাংলাদেশের শিল্প মালিকরা বেঁচে থাকবে? যদি এভাবে আগামী দিনেও চলতে থাকে, তবে আসন্ন দু এক মাসের মধ্যেই দেশের অন্তত 50 শতাংশ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে। আর এই ফ্যাক্টরিগুলি একবার একবার বন্ধ হয়ে গেলে ভবিষ্যতে তা আর খোলা যাবে না বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ওপার বাংলার বস্ত্র কারখানা সংগঠনগুলির সভাপতি।