সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বহুদিন ধরেই বিতর্ক দানা বাঁধছে। আর এবার সেই বিতর্ক নতুন মোড় নিল। সূত্রের খবর, বহু বছর ধরে চলা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (Power Purchase Agreement) নিয়ে আপত্তি এবং অভিযোগের পর এবার আলোচনায় বসার সবুজ সংকেত দিয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেড।
সূত্র বলছে, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ঢাকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিমের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শামিল হন আদানি পাওয়ারের প্রধান কর্মকর্তা শেরসিং বি খিয়ালিয়া। আর সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে পিপিএর বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বিপিডিবির ইতিবাচক সাড়া
বেশ কয়েকটি সূত্র জানাচ্ছে, আদানির এই প্রস্তাবের জবাবে বিপিডিবির চেয়ারম্যান বলেছেন, আমরা আলোচনায় বসার জন্য এক্কেবারে প্রস্তুত। প্রাথমিকভাবে আমরা ইতিবাচকভাবে মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছি। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত এগোনোর আগে আমরা অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি নেব।
এমনকি বিপিডিবি ও বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র মারফত জানা গেছে, চুক্তির বিভিন্ন ধারা, বিশেষ করে কর অব্যাহতি, দেরিতে পেমেন্টের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চার্জ এবং কয়লার মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া নিয়ে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। আর এতদিনে তার সুরহা মেলেনি। তাই এবার আদানির সাথে আলোচনায় বসে তার পরিসমাপ্তি ঘটাবে।
গাড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র
প্রসঙ্গত, 2017 সালে 25 বছরের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল আদানির গাড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র। সূত্রের খবর, এর ক্ষমতা প্রায় 1600 মেগাওয়াট। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর আগে থেকেই বেশ কিছু চুক্তির ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বাংলাদেশ।
সূত্র বলছে, 2023 সালের 7 এপ্রিল বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছিল আদানি পাওয়ার লিমিটেড। এরপর প্রথম ধাপে 750 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। কিন্তু এরপর থেকে কর ছাড় এবং দেরিতে পেমেন্টের চার্জ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে একের পর এক বিতর্কের দানা বাঁধে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টেও মামলা দায়ের হয়।
আরও পড়ুনঃ চাকরি হারানোর প্রতিশোধ! CBI আধিকারিকের উপর তীর-ধনুক নিয়ে হামলা
বকেয়া বিল নিয়ে আদানির বক্তব্য
এদিকে বৈঠকে আদানির পাওনা বিদ্যুৎ বিল নিয়েও আলোচনা হয়। বিপিডিবির হিসাব অনুযায়ী, 2025 সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত আদানির কাছে বকেয়া ছিল প্রায় 562.09 মিলিয়ন ডলার।
আর বৈঠকে আদানি নম্রভদ্র ভাবেই দ্রুত বিল পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছে। তবে বিপিডিবির চেয়ারম্যান জানিয়েছে যে, বকেয়া পরিশোধের জন্য কোনোরকম নির্দিষ্ট সময়ও দেওয়া হয়নি। শুধু আদানি অনুরোধ করেছে, যাতে বিল পরিশোধ তাড়াতাড়ি করা হয়।
এদিকে এই চুক্তির পর্যালোচনা কমিটি তাদের সুপারিশকে ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করেছে। এখন অপেক্ষা শুধুমাত্র আলোচনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং নতুন চুক্তিতে কী কী শর্তাবলী আরোপ হয় এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ পরিষেবা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা দেখার।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |