শেখ হাসিনার পর এবার ইউনূস! বাসভবন দখলের চেষ্টা আন্দোলনকারীদের, ফের অশান্ত বাংলাদেশ

Published on:

govt jobs

প্রীতি পোদ্দার: ছাত্র ছাত্রীদের কোটা সংরক্ষণ আইন বাতিলের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে যে ভয়ঙ্কর বিক্ষোভ এবং আন্দোলনের নজির গোটা বিশ্ব দেখেছে তাতে বেশ ভয় ধরে গিয়েছে সকলের মনে। উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ এবং রাজনীতি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তারপরেই তৈরি হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যেখানে মূল উপদেষ্টা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছিল মহম্মদ ইউনূস। কিন্তু নতুন সরকার গঠন হলেও আন্দোলনের আগুন এখনও নিভল না। নতুন করে আরও এক বার রাগের ক্ষোভে জেগে উঠল বাংলাদেশ।

চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ

WhatsApp Community Join Now

সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩১ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ এ বাড়ানোর দাবিতে বাংলাদেশে ফের শুরু হয়েছে বিক্ষোভ এবং আন্দোলন। এর আগেও শেখ হাসিনার আমলে বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়েছিল বেশ কয়েকবার। তখন অবশ্য আওয়ামি লিগ সরকার কোনো রকম ভাবে এই বিক্ষোভ আন্দোলন দমন করেছিল। হাসিনা সরকার অবশ্য তাদের দাবি কখনই মানেনি। তবে, এখন পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে।ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সরকারী চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে রীতিমত পুলিশের সঙ্গে মারপিট লেগে গেল চাকরিপ্রার্থীদের।

রাস্তায় রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীদের হাতে হাতে দেখা যাচ্ছে ‘উই ওয়ান্ট নো এজ লিমিট’, ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ চাই’, ‘বয়সসীমা মুক্ত করি-স্বপ্ন গড়ি দেশ গড়ি’, ‘শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে বয়সসীমা উন্মুক্ত চাই’, ‘বৈষম্যবিরোধী দেশ গড়তে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ চাই’-ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড। একে একে সকলেই সেই সমাবেশে যোগদান করে চলেছে। গতকাল সকালে ঢাকার শাহবাগে, জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে মিন্টো রোডে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সরকারি বাসভবন, ‘যমুনা’র দিকে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সভা-সমাবেশে করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশি পুলিশ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ‘যমুনা’ প্রাঙ্গণ দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে যায় আন্দোলনকারীরা।

বাঁধা দেওয়ার চেষ্টায় কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল পুলিশকর্মীরা

আর মিছিল এগোতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। আর বাধা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতেই পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর হয়ে ওঠে যে শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের পিছু হঠাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রবারের বুলেট ছোড়ে পুলিশ। শুধু তাঁদের ওপর নয়। হামলা করা হয় ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত আশুলিয়ায়, বকেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান পোশাক শ্রমিকদের উপরেও।

জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় দোকানপাট ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে পোশাক শ্রমিকদের একাংশ। যার ফলে পরিস্থিতি ভয়ংকর এবং হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। বাধ্য হয়েই শেষে আন্দোলন দমন করতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। গোটা ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং আহত হন ৫০ জনেরও বেশি। আশঙ্কা জাগছে তবে কি ফের দুই মাস আগে ঘটে যাওয়া গায়ে কাঁটা ধরানো ভয়ংকর আন্দোলনের স্মৃতি ফিরে এল।

সঙ্গে থাকুন ➥
X