প্রীতি পোদ্দার, ঢাকা: গত বছরের আগস্ট থেকেই উত্তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। কোটা বাতিলের দাবি থেকে শুরু হয়েছে আন্দোলনের ধ্বংসলীলা। আর তার জেরেই প্রধানমন্ত্রীর পদ বাধ্য হয়েই ছাড়তে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। তারপরেই রাজত্ব শুরু হল মুহাম্মদ ইউনূসের। রীতিমত মৌলবাদী তাণ্ডব শুরু হয়েছে সেখানে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ও অত্যাচারের যেন ক্রমেই বেড়ে চলেছে, দাবি একাংশের। নতুন বছর পড়লেও কমেনি অশান্তি। আর এই আবহে একের পর এক প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম যেন বেড়েই চলেছে। এমনকি চাল কিনতে গিয়েও পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মধ্যবিত্তদের।
ফের চালের জন্য ভারত ভরসা বাংলাদেশের
এই মুহুর্তে বাংলাদেশে আমনের ভরা মৌসুম চলছে। নতুন ধানের চাল পুরোদমে বাজারে আসছে। কিন্তু এবছর সেই চিত্র যেন অনেকটাই পরিবর্তন হল। চালের জোগান বেশি থাকা সত্ত্বেও দাম কমার বদলে বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে গত এক মাসে বাংলাদেশে খুচরো বাজারে প্রতি বস্তা চালের দাম ৩৫০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা। এমনকি বাজারে সরু চালের দাম প্রতি কেজিতে ৭ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বাদ যায়নি মোটা চালের দাম। জানা গিয়েছে চালের প্রতি কেজি পিছু ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। আর এই আবহে ফের ভারতের কাছে সাহায্যের হাত পাতে বসেছে ইউনূস সরকার।
৫০ হাজার টন চাল কিনতে চলেছে বাংলাদেশ
সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ। আসলে মুহাম্মদ ইউনূস চাল কিনতে টেন্ডার ডেকেছিল। আর সেই টেন্ডারে সর্বনিম্ন দর দিয়েছিল ভারতের বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড। আর সেই কারণে তাই তাঁদের থেকে ৪৫৮.৮৪ মার্কিন ডলার প্রতি টন হিসেবে ৫০ হাজার টন চাল কিনতে চলেছে বাংলাদেশ। প্রতি কেজি চালের ক্রয়মূল্য ধার্য করা হয়েছে ৫৫.০৬ টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে বাংলাদেশের খরচ হবে ২৭৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
গত মাসে দু’বার এদেশ থেকে চাল কিনেছিল ইউনূস সরকার। ৪ ডিসেম্বর প্রতি কেজিতে ৫৬.১২ টাকা দরে চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছিল ঢাকা। তার কিছুদিন পরেই ১৮ ডিসেম্বর ৫৪.৮০ টাকা প্রতি কেজি দরে ভারত থেকে চাল কেনার জন্যে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল ঢাকা প্রশাসন থেকে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত গত কয়েকমাসে ভারত থেকে ১ লাখ টন চাল কিনেছে বাংলাদেশ। তাই এবার ঘরোয়া বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল কিনবে ইউনূসের সরকার। আর এই একই পরিমাণ চাল ভারত বাদে বাকি দেশগুলো চড়া দামে বিক্রি করছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের করাচি থেকে আনলে প্রতি মেট্রিক টনের চালের দাম ৫৩৬.২১ মার্কিন ডলার পড়ছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড থেকে দাম পড়ছে ৫৫৩.২৮ মার্কিন ডলার।