প্রীতি পোদ্দার, ঢাকা: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এর আগস্ট মাসের শুরুর দিকে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা বাংলাদেশ (Bangladesh)। কোটা বাতিলের দাবিতে রীতিমত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেশ জুড়ে। আর সেই বিক্ষোভ এতটাই ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল যে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর গদি ছাড়তে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে। সেই সময় সেখানে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর তখন থেকেই বাংলাদেশের নয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কার্যত ‘নিষিদ্ধ’ হয়ে পড়েছিল আওয়ামি লিগ। অভিযোগ, দেশের কোথাও তাদের সভা–সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
নতুন বছরের প্রথম দিনই ফের উঠল শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ
আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে অনেকেই প্রাণের ভয়ে আওয়ামির অনেক নেতা–মন্ত্রী–সাংসদই দেশছাড়া হয়েছিল। এমনকি শেখ হাসিনাও প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে কোনোরকমে দেশ ছেড়ে ভারতে ঠাঁই নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও হিংসা কমেনি। সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নানা অত্যাচার হয়েই চলেছে। ইসকনকে কেন্দ্র করেই চলছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের নানা দুর্যোগ। এমতাবস্থায় ফের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরাতে তৎপর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। নতুন বছরের প্রথম দিনই স্পষ্ট বার্তা দিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। এবং সেই বক্তব্যে স্পষ্ট ফুটে উঠল ভারতের বিরুদ্ধে সম্পর্ক নিয়ে।
প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকে কূটনৈতিক নোট পাঠানো হয়েছিল। তবে এই নিয়ে ভারত এখনও সরকারীভাবে কিছু বলেনি। আর এই আবহে ফের গতকাল অর্থাৎ বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। প্রশ্ন করা হয়, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে না পারলে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কি স্বাভাবিক থাকবে? জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, “দুটোই পাশাপাশি চলবে। এটা একটা ইস্যু। তবে আমাদের আরও অনেক স্বার্থের ইস্যু আছে। সেটাও চলবে।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট জবাব শেখ হাসিনার
শুধু শেখ হাসিনার ফেরত আসার সিদ্ধান্ত নয়, এদিন সাংবাদিক বৈঠকে উঠে আসে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের আচরণ এবং গতিপ্রকৃতি নিয়ে। এইমুহুর্তে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন, প্রশ্ন করায় তৌহিদ হোসেন জানান, “ভারত, চিন এবং আমেরিকা সবার সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। এই তিন দেশই অগ্রাধিকারে থাকবে। তবে নতুন বছরে আমাদের অগ্রাধিকার রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করা এবং এই তিন দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক-কূটনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ও ভাল অবস্থা সৃষ্টি করা।” তার মানে বাংলাদেশ সরকার এখনও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে।