বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় প্রতিমুহূর্তে প্রতিবেশীকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। এমতাবস্থায়, একেবারে নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে হাজির ইউনূসের সরকার। জানা যাচ্ছে, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা হাতছাড়া হওয়ায় দিল্লির বিরুদ্ধে বিরাট পদক্ষেপ নিল ঢাকা!
সূত্রের খবর, ওপার বাংলার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ভারত থেকে আমদানি করা বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করছে, ইউনূস সরকারের এমন পদক্ষেপে নাকি বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বে ভারতের অর্থনীতি!
ভারতকে পাল্টা জবাব বাংলাদেশের!
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পাল্টা জবাব হিসেবে এদেশ থেকে আমদানি করা সুতো, আলু, গুড়, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, ফলের জুসের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক টিভি, সাইকেল, রেডিও, মোটরবাইক ও একাধিক যন্ত্রাংশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ। জানা যাচ্ছে, মূলত বাংলাদেশের স্থানীয় মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার ভারত থেকে আমদানি হওয়া একাধিক দ্রব্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ইউনূস সরকার।
ওপার বাংলার সংবাদ মাধ্যমের পৃষ্ঠায় দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের এমন পদক্ষেপে অর্থনৈতিক চাপে পড়তে পারে ভারত। সেই সাথেই, ভারত থেকে আমদানিকৃত দ্রব্য নিষিদ্ধ করে চরম ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বাংলাদেশও। বেশ কয়েকটি সূত্র অনুযায়ী, ওপার বাংলার এমন সিদ্ধান্তের পর সুতো আমদানি বন্ধ করায় পড়শি দেশের বস্ত্র শিল্পে বিরাট প্রভাব পড়বে। জানিয়ে রাখি, আগেই স্থলপথে ভারত থেকে সুতো আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এবার সেই সূত্র ধরেই, ভারত থেকে একাধিক পণ্য আমদানি বন্ধ করল ওপার বাংলার সরকার।
ক্ষতি হবে বাংলাদেশেরই
সম্প্রতি ভারত থেকে সুতো আমদানি নিষিদ্ধ করে বিরাট চাপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। সে দেশের রপ্তানিকারকরা বলছেন, ভারত থেকে 90 শতাংশেরও বেশি সুতো আমদানি করতো বাংলাদেশ। যা তাদের পোশাক শিল্পের মূল রসদ। জানিয়ে রাখি, কৃষি প্রধান দেশ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভীত দাঁড়িয়ে রয়েছে বস্ত্র শিল্পের ওপর। তবে ভারত থেকে স্থলপথে সুতো আমদানি নিষিদ্ধ করায় একেবারে হামাগুড়ি দিচ্ছে সে দেশের বস্ত্র শিল্প! তবে এমন সিদ্ধান্তের মাঝে লাভের গুড় খাচ্ছে বাংলাদেশের স্থানীয় বস্ত্র কল মালিকরা। কেননা, স্থলপথে ভারত থেকে সুতো আমদানি বন্ধ হওয়ায় এবার তাঁদের থেকেই অতিরিক্ত দাম দিয়ে সুতো কিনতে হবে বস্ত্র প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ীদের।
বলা বাহুল্য, ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করায় বাংলাদেশ যে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়েছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন ওপার বাংলার বাণিজ্য উপদেষ্টা। সেই সাথেই 2000 কোটির অতিরিক্ত খরচের কথাও জানানো হয়েছিল ওপার বাংলার তরফে। এছাড়াও ভারতের এক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে কার্গো বিমানের ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার জোগাড়! সব মিলিয়ে, প্রতিবেশীকে শায়েস্তা করতে গিয়ে একেবারে লেজে গোবরে অবস্থা হয়েছে ইউনূস সরকারের।
অবশ্যই পড়ুন: পহেলগাঁও হামলার দাঁতভাঙা জবাব পেতে চলেছে পাকিস্তান! বিরাট কাণ্ড ঘটালেন প্রধানমন্ত্রী
কিন্তু তা সত্ত্বেও ফের ভারত থেকে আমদানি হওয়া প্রয়োজনীয় পণ্য নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ড। যার জেরে ফের চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশের সরকার, এমনটাই মনে করছেন সে দেশের বিশ্লেষকরা। যদিও, বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের দাবি, ভারতের কাছ থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করার মাধ্যমে, পাল্টা জবাব দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ যে ভারতের ওপর নির্ভর করে থাকতে চায় না সে কথা বোঝাতেই চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। যদিও এমন সিদ্ধান্তে ফের গাড্ডায় পড়বে বাংলাদেশ, সেই কথায় আলোচিত হচ্ছে নানা মহলে।