সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ ইলিশ (Ilish) মাছ…সে এপার বাংলা হোক বা ওপার বাংলা, এই মাছকে ঘিরে সকলের মধ্যে এক আলাদাই ইমোশন কাজ করে। তারওপর এখন বর্ষাকাল চলছে। দুপুরে খাবারের পাতে একটু ইলিশ মাছ ভাজা, পাতুরি, ভাপা থাকলে মন্দ হয় না। তবে এই মাছ কিন্তু এখনও অবধি অনেকের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিশেষ করে কেউ যদি পদ্মাপারের ইলিশ খাওয়ার ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে পকেটে দম না থাকলে চলে না। তবে এবার এই ইলিশকে ঘিরেই শুরু হল হুলুস্থুলু কাণ্ড। নাকি মাত্র ১০ টাকায় বাংলাদেশে পদ্মার ইলিশ (Padma River Ilish) পাওয়া যাচ্ছে!
মাত্র ১০ টাকায় মিলছে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ!
ওপার বাংলার সময় খবর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের ফরিদপুরের পদ্মাপারের ইলিশ নাকি মিলছে মাত্র ১০ টাকায়! আর এই খবর চাউর হতেই চারিদিকে শোরগোল পড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই জলের দরে মাছ কিনতে বাজারে হুমরি খেয়ে পড়েন মাছপ্রেমীরা। কিন্তু গিয়ে তাঁরা যা জানতে পারেন, তা সকলকে অবাক করে রেখে দিয়েছে। নিশ্চয়ই ভাবছেন কী হয়েছে? চলুন তাহলে জেনে নেবেন ঝটপট।
আসলে ঘোষণা করা হয়েছিল যে ফরিদপুর -৪ আসনের স্বাধীন এমপি প্রার্থী মুফতি রায়হান জামিল সাহেবের পক্ষ থেকে ১০ টাকা করে ইলিশ মাছ বিক্রি করা হবে। এদিকে এহেন ঘোষণার পর রীতিমতো মাথা খারাপ হয়ে যায় মানুষের। এই দুর্মূল্য বাজারে পদ্মার ইলিশ কিনা মাত্র ১০ টাকায় মিলবে। স্বাভাবিকভাবেই সেই মাছ কিনতে ফরিদপুর মাছ বাজারে হাজারো মানুষের ঢল নামে।
এদিকে মাছ কিনতে এত মানুষের ঢল দেখে পালাতে বাধ্য হন এমপি। তাঁর এই নির্বাচনী গিমিক একপ্রকার ব্যর্থ হয় বলে খবর। ফলে শেষমেষ তিনি ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান। সদরপুর বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এই ঘটনা ঘটে। রায়হান জামিল সপ্তাহজুড়ে ১০ টাকায় ইলিশ বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পোস্টার ছড়িয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে জামিল প্রায় ৬০০টি ইলিশ নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু ২০০০ জনেরও বেশি লোক সেখানে উপস্থিত হয়েছিল। মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে হতাশা আরও বেড়ে যায়, যার ফলে ধাক্কাধাক্কি, ধাক্কাধাক্কি এবং বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। জামিল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, কিন্তু পরে ভাসানচর ইউনিয়নের ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা তার গাড়ি আটক করে।
কী বলছেন স্থানীয়রা?
“আমাদের বলা হয়েছিল ইলিশ ১০ টাকায় বিক্রি হবে। আমরা সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু লাইনে ধাক্কাধাক্কি আর ধাক্কাধাক্কি ছাড়া আর কিছুই পাইনি। তারপর যে লোকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সে পালিয়ে গেল,” বলেন স্থানীয় বাসিন্দা আমেনা বেগম। অপরদিকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে জামিল বলেন, “ইলিশার দাম অনেক বেশি, এবং অনেকেরই তা বহন করার সামর্থ্য নেই। আমি ৬০০ পরিবারকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ভিড় ছিল অপ্রতিরোধ্য। আমি ক্ষমা চাইছি।”