নতুন নোট ছাপিয়ে বিরাট বিপাকে বাংলাদেশ

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দেশের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের অবদান অনেক আগেই গুলে খেয়েছে বাংলাদেশবাসী। মূলত শেখ হাসিনার পতনের পরই ওপার বাংলায় বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের (Bangladesh) জাতীয় পিতার মূর্তির সাথে নানান অগ্রহণযোগ্য কার্যকলাপ, সবই দেখেছে গোটা বিশ্ব।

আর সেই আবহেই রবীন্দ্রনাথের তৈরি জাতীয় সংগীত বদলের পাশাপাশি জাতীয় কারেন্সি বা টাকা বাতিলের জোরালো ডাক দিয়েছিল ইউনূসের সমর্থনকারী থেকে শুরু করে ওপার বাংলার অসংখ্য জনগণ। আর সেই সূত্র ধরেই ঈদের আগে বাংলাদেশের বাজারে এসে পৌঁছেছিল 20, 50 ও 1 হাজারের নতুন নোট। তবে এবার সেই সব নোট নিয়ে বিরাট বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশবাসী।

নতুন নোট নিয়ে তৈরি হয়েছে সমস্যা

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঈদের আগে বাংলাদেশের বাজারে যে 20, 50 ও 1 হাজারের নোটগুলি এসে পৌঁছেছিল সেই নোটগুলো কিছুটা ডিজিটাল ও আধুনিক ঢঙে নকশা বানিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যে নকশাগুলির মধ্যে রয়েছে কান্তিজির মন্দিরসহ সংস্কৃতির বেশ কিছু দিক।

নোটগুলি আদতে দেখতে আকর্ষণীয় হলেও শোনা যাচ্ছে 92 শতাংশ মুসলিম দেশ হিসেবে নোটগুলিকে ভাল চোখে দেখছেন না অনেকেই। তবে সবচেয়ে সমস্যার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে নোটগুলি গ্রহণ করছেন না বাংলাদেশের বহু ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে অনেকেই। এমনকি এও শোনা যাচ্ছে, নতুন নোটগুলি ATM বুথেও জমা দেওয়া যাচ্ছে না!

কিন্তু কেন হচ্ছে এমন? বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে একজন যুবককে নাকি 1 হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে অকপটে সমস্যা জাহির করতে দেখা গিয়েছে। তিনি নাকি বলেছেন, বাংলাদেশের কোনও দোকানদার এই নতুন টাকা নিচ্ছে না। এমনকি ওপার বাংলার ATM বুথ গুলিতেও এই সরকার স্বীকৃত নোটগুলি গ্রহণ করা হচ্ছে না। আর এখানেই প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে কি প্রযুক্তিগত ভাবে এই নোটগুলি মেশিনে থাকা টাকার আয়তনের সাথে মিলছে না? নাকি বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের অবকাঠামো গত দুর্বলতার কারণে চলছে না এইসব নোট?

অবশ্যই পড়ুন: মাত্র ১০ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা বেতন পান আদানি! আম্বানি-মিত্তালদের কত?

প্রশ্ন উঠছে সরকারের ভূমিকা নিয়েও!

সরকার সমর্থিত নোটগুলিতে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক ছাড় দিলেও, সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছনোর পর সেই সব নোট নিয়ে বারংবার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমজনতাকে। সাধারণ দোকান থেকে শুরু করে ATM বুথ কোনও ক্ষেত্রেই চালানো যাচ্ছে না নতুন নোটগুলি। আর এরপরই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি পূর্বপরিকল্পিত ছিল? সরকার কি ইচ্ছে করেই নোট বাতিলের খেলা খেলল?

নাকি এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ব্যর্থতা? এমন প্রশ্ন যখন উঠছে বাংলাদেশ জুড়ে, ঠিক সেই আবহে নতুন নোট তৈরির পর তা না চলায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একেবারে হাসির খোরাক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন নোট নিয়ে এমন সমস্যা বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে দাঁড় করাবে।