ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ পৃথিবীতে একমাত্র বাংলাদেশই তিনবার স্বাধীন হয়েছে। দু’বার খাতায় কলমে, একবার মুখে মুখে স্বাধীনতা অর্জন করেছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ। যদিও, অধিকাংশ বাংলাদেশিদের দাবি তাঁদের দেশ দু’বার স্বাধীন হয়েছে। বলে দিই, ১৯৪৭ সাল ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পায় ভারত। সেই সময় বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত আজকের বাংলাদেশ ১৯৪৭-এ প্রথম স্বাধীনতা পায়। যদিও, সেটি স্বাধীনতা ছিল না। কারণ ভারতকে চাপে রাখতে তৎকালীন জিন্নাহ সরকার পূর্ব পাকিস্তানে নিজেদের হাতে নিয়ে অকথ্য অত্যচার চালাত।
এরপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্তি পায় বাংলাদেশ। সেই সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সহয়াতায় হাজার হাজার ভারতীয় সেনা পাঠায় বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনার দাপটে পালাতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ১৯৭১ এর যুদ্ধে ৩৯০০ ভারতীয় সেনা প্রাণ হারান। আহত হন প্রায় ১০ হাজার। পূর্ব পাকিস্তান থেকে জিন্নার দেশের সেনা পালানোর পর বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়।
আর এখন বাংলাদেশিদের মতে দেশ আবার স্বাধীন হয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ আর তার দেশ ছেড়ে ভারতে এসে আশ্রয় নেওয়াকে স্বাধীনতা বলেই গণ্য করছেন ওপার বাংলার মানুষ। বর্তমানে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। আর সেই সরকারের প্রধান হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন দিয়ে শুরু বিক্ষোভ হাসিনার পতন দিয়েও শেষ হয়নি। এখন রোজই ওই দেশ থেকে নানান দাবি উঠে আসছে। এমনকি এখনও বহু জায়গায় থেকে অশান্তির খবর আসছে। আর এই নতুন বাংলাদেশে আরেকটি জিনিস মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, সেটি হল ভারত বিদ্বেষ। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন পেজ থেকে ভারত বিদ্বেষী পোস্ট করা হচ্ছে। যদিও, এই পথম নয়, হাসিনা সরকার থাকাকালীনও বাংলাদেশিদের মধ্যে ভারত বিদ্বেষ অনেক দেখা গিয়েছে। এমনকি কয়েকমাস আগেই ওপার বাংলায় ‘ভারত বয়কট’ এর ডাকও উঠেছিল। কিন্তু ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় সেই বয়কটিরাই আবার কেঁদে ভাসিয়েছিল।
অখণ্ড বাংলাদেশের মানচিত্র
এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন পেজ থেকে নানান ম্যাপ প্রকাশ করা হচ্ছে। যেখানে কখনও ওরা দাবি করছে যে, তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকার পূর্বত্তোর ভারত দখল করে অখণ্ড বাংলাদেশ বানাবে। আবার কখনও দাবি করছে যে, গোটা ভারতই নাকি তাঁরা দখল করে নেবে। যদিও, তাঁদের এসব আজব আজব দাবিকে পাত্তা দিতে নারাজ ভারতের জনগণ। পাল্টা ভারতীয় নেটিজেনরা বলেছেন যে, একবার ফারাক্কা বাঁধটা ছেড়ে দেব কি?
বলে দিই, নদী মাতৃক বাংলাদেশ সারা বছরই জল যন্ত্রণায় ভোগে। কখনও বেশি জল, আবার কখনও কম জল। এদিকে ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে ভারত জল ছাড়লেই বাংলাদেশের একাধিক এলাকা ডুবে যায়। আবার জল না ছাড়লেও বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলের আকাল দেখা দেয়। তাই এহেন অবস্থায় ভারতীয়রা বাংলাদেশিদের ফারাক্কা ব্যারজের ভয় দেখিয়েই চুপ করে থাকছেন। আবার অনেকেই বলছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও যদি ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলেও নাকি এক দিনেই পৃথিবীর মানচিত্রে আর বাংলাদেশ বলে কিছু থাকবে না। তবে, অফিসিয়ালি কোনও দেশই এখনও এসব নিয়ে মাথা ঘামায়নি।