বন্ধুত্বের মূল্য চোকাতে হবে পাকিস্তানকে! কোটি কোটি ডলার আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ

Published on:

Bangladesh to collect big money from Pakistan at foreign secretary-level meeting

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: শেখ হাসিনার পতনের পরই বদলে গিয়েছে ওপার বাংলার (Bangladesh) ছবি। শান্তিতে নোবেল জয়ীর হাতে ক্ষমতা আসতেই ভারত বিরোধী পাকিস্তানের সাথে সখ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশের। তবে এবার সেই বন্ধুত্বে চির ধরতে চলেছে! সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই পাকিস্তানের কাছে থেকে ক্ষতিপূরণ সহ অন্যান্য দাবি মাফিক মোটা টাকা আদায় করতে পারে মহম্মদ ইউনূসের সরকার।

শোনা যাচ্ছে, 1971 সালে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা থেকে শুরু করে 1970 সালে অবিভক্ত পাকিস্তানের ঘূর্ণিঝড়ের সময় দেওয়া বৈদেশিক সহায়তার বাকি পাওনা পরিশোধ করার বিষয়গুলি নিয়ে পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারে বাংলাদেশ।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দীর্ঘ 15 বছর পর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। শোনা যাচ্ছে, বৈঠক উপলক্ষে ইতিমধ্যেই ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। 17 এপ্রিল দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে কাটায় কাটায় পাওনা গন্ডা বুঝে নিতে বড় দাবি তুলতে পারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রক।

পাকিস্তানের কাছ থেকে পাওনা আদায় করবে বাংলাদেশ?

দীর্ঘ 15 বছর পেরিয়ে শেষমেষ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। সূত্র যা বলছে, আগামীকাল অর্থাৎ 17 এপ্রিল, বৃহস্পতিবার
ওপার বাংলার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় হওয়ার কথা সেই বৈঠক। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তানের সাথে সেই বৈঠকে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন ওপার বাংলার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন।

কূটনৈতিক সূত্রে খবর, দুই দেশের মধ্যে সার্বিক দ্বিপাক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হবে। জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বাণিজ্য বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আকাশ পথে যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, কৃষি, মৎস্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে। বেশ কয়েকটি সূত্র জানাচ্ছে, আগামীকালের বৈঠকে স্বাধীনতার আগেকার যাবতীয় পাওনা নিয়ে কথা বলবেন ওপার বাংলার পররাষ্ট্র সচিব।

পুরনো হিস্যা বুঝে নেবে বাংলাদেশ?

বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, 1970 সালে অবিভক্ত পাকিস্তানের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানে বহু বাংলাদেশী কর্মীরা টাকা রেখেছিলেন। তবে পরবর্তীতে দেশভাগ হয়ে যাওয়ায় তাদের অ্যাকাউন্ট স্থানান্তরিত হয়ে যায় লাহোরে। ওপার বাংলার বহু কর্মী অভিযোগ করেছেন, দেশের মাটি ভাগ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁদের। তবে দীর্ঘদিনের সঞ্চিত অর্থ ফেরত দেয়নি পাকিস্তান। ঢাকার বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক সুস্থ রাখতে চায় বাংলাদেশ।

তবে শেষ পর্যন্ত অমীমাংসিত ইস্যুগুলিকে মিটিয়ে তবেই দুই দেশের মধ্যে সখ্যতা বজায় রাখবে ইউনূসের সরকার। ওই সূত্র দাবি করছে, বাংলাদেশের তরফে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের লক্ষ্যে এক বিশেষ কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে পাকিস্তানকে। একই সাথে 1970 সালে অবিভক্ত পাকিস্তানে ঘূর্ণিঝড়ের সময় দেওয়া অর্থ সাহায্য এবার ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ।

অবশ্যই পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ ইস্টবেঙ্গলের সাথে যুক্ত ছিলেন! যুক্তি দিয়ে বোঝালেন লাল হলুদ কর্তা

প্রসঙ্গত, শেষবারের মতো 2010 সালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে বৈঠকে অবিভক্ত পাকিস্তানের ন্যায্য সম্পদের অংশ দাবি করেছিল বাংলাদেশ। ওপার বাংলার পররাষ্ট্র সচিবের তরফে পাকিস্তানের কাছে আবেদন জানিয়ে বলা হয়, অবিভক্ত পাকিস্তানের ঘূর্ণিঝড়ের জন্য যে আর্থিক সাহায্য দিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই 200 মিলিয়ন ডলার সহযোগে মোট 4.32 বিলিয়ন ডলার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যদিও বাংলাদেশের এমন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের তরফে সেভাবে কোনও সবুজ সংকেত মেলেনি। মনে করা হচ্ছে, দীর্ঘ 15 বছর পর অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে সেই পুরনো হিসেব মিটিয়ে নিতে চাইবে ইউনূসের পররাষ্ট্রমন্ত্রক।

সঙ্গে থাকুন ➥