প্রীতি পোদ্দার, ঢাকা: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করার জন্যই ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় ১২৩৪ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করেছিল আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)। কিন্তু অগস্টে হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা এবং দেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসার পরেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে সেই সময় উঠেছিল হাজার প্রশ্ন। সেই সময় আদানি গোষ্ঠী বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল যে বিদ্যুতের বকেয়া বিল বাবদ ৮০ কোটি ডলার বকেয়া রয়েছে। সেই সময় ইউনূস সরকার পাল্টা জানায়, দেশে ডলার সঙ্কট সত্ত্বেও তারা আদানি গোষ্ঠীকে ১৫ কোটি ডলার দিয়েছে। বাকি টাকাও মেটানো হবে বলে আশ্বস্ত করে ঢাকা। আর এই আবহে বড় ফ্যাসাতে পড়েন গৌতম আদানি।
ঘুষ মামলায় নাম জড়াল আদানির!
জানা গিয়েছে, আমেরিকার আদালত সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়া এবং ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে আদানিকে। অভিযোগ ওঠে বাজারের থেকে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের মোট ২২৩৭ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন আদানিরা। ঘুষের টাকা আমেরিকার বাজার থেকে সংগ্রহ করা পুরোপুরি বেআইনি। ফলে মামলার মুখে পড়েছে শিল্পপতিরা। যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন গৌতম আদানি। আর এই আবহেই এবার বাংলাদেশে ইউনূস সরকারও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন।
বিবৃতিতে কী বলা হয়েছে?
গতকাল অর্থাৎ রবিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের দফতর থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ্যে আসে। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, “শেখ হাসিনার আমলে গৌতম আদানির সংস্থার সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎচুক্তি খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সেগুলিকে পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। এমনকী চুক্তি বাতিলও করা হতে পারে। এছাড়াও বিবৃতিতে বাণিজ্য চুক্তিগুলি করার নেপথ্যে অন্য কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল কি না, তা তদন্ত কমিটিকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে ইউনুস সরকার।
জানা গিয়েছে আদানি ছাড়াও আরও ছ’টি সংস্থার সঙ্গে হওয়া বাণিজ্যচুক্তিও আতশকাচের তলায় রয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এই ছ’টি সংস্থার মধ্যে একটি চিনের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা। আর বাকি পাঁচটি সংস্থা হাসিনার দল আওয়ামী লিগের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও সব ক্ষেত্রেই হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বের কমিটি চুক্তিগুলি খতিয়ে দেখবে বলে জানা গিয়েছে। কমিটির প্রধান হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে তাঁরা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইনি এবং অনুসন্ধানমূলক সংস্থাগুলির সহায়তা চাইছেন।