ঢাকাঃ ফের একবার ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ। বিগত বেশ কিছুদিন ধরে কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে উঠেছিল ওপার বাংলা। তবে এখন সে দেশে গঠিত হয়েছে নতুন সরকারের। কিন্তু এই নতুন সরকার গঠন হতে না হতেই নতুন করে মহা বিপাকে পড়ল বাংলাদেশ। এবার ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশ। ভারতের তরফে দুটি বাঁধ খুলে দেওয়ার জেরে আসাম, ত্রিপুরার পাশাপাশি বন্যার কবলে বাংলাদেশের বহু জেলা। আর এই ঘটনার বিরুদ্ধেই নতুন করে পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন।
ফের ছাত্র বিক্ষোভ শুরু
নতুন করে ছাত্র বিক্ষোভকে ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। জানা গিয়েছে, ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেওয়ার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কয়েক হাজার পড়ুয়া। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ঢাকাকে না জানিয়ে ভারতের ডুম্বুর ও গজলডোবা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার গভীর রাতে বিক্ষোভ মিছিল করলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ৬০০-রও বেশি পড়ুয়া রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখা তে শুরু করেছে।
শিক্ষার্থী নুর নোভি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, রক্তের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সে সময় ভারত ছাড়া সব দেশ আমাদের পক্ষে ছিল; তারা বারবার আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা এখন যা করছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াব। আমি সরকারকে বলতে চাই, আন্তর্জাতিক নদীগুলোর জলের ন্যায্য অংশ আমাদের পেতে হবে।’ এ ছাড়া ‘বন্ধু না শত্রু-শত্রু; ‘হাসিনার বন্ধু, আমাদের শত্রু’; `তুমি কে আমি কে, আবরার, আবরার; কে মেরেছে কে মেরেছে স্বৈরাচার’ এই ধরনের স্লোগান তুলতে শোনা যায় পড়ুয়াদের।
বন্যায় বিপর্যস্ত বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এই গভীর নিম্নচাপে জেরে বাংলাদেশ সহ ভারতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেইসঙ্গে উত্তাল হয়ে রয়েছে সমুদ্র। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে উঠেছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ত্রিপুরার ডাম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের গেট খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৫ মিনিট নাগাদ তিনটি বাঁধের গেটের মধ্যে একটি খুলে দেওয়া হয়। বহু সীমান্তবর্তী জেলা কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী প্লাবিত হয়েছে। ত্রিপুরার চারটি নদী হাওড়া, ধলাই, মুহুরী ও খোয়াই নদীর জল বিপদ সীমানা ছাড়িয়ে গেছে, যার ফলে ৫৬০০ পরিবারকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নাকি যাওয়া হয়েছে।
রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে ত্রিপুরার দক্ষিণ ত্রিপুরা ও গোমতী জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের জেরে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ভারতও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আজ বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত নদীর জল সীমান্তের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জানা যাচ্ছে, হাওড়া নদীর জল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবেশ করেছে, ধলাই মৌলভীবাজারে প্রবেশ করেছে, মুহুরী ফেনীতে প্রবেশ করেছে এবং খোয়াই নদীর জল সিলেটে প্রবেশ করেছে।