বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: স্থলপথে বাণিজ্যের রাস্তা বন্ধ করেছে ভারত, যার জেরে এক প্রকার বাটি নিয়ে পথে বসার জোগাড় বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের! দিল্লির নিষেধাজ্ঞার (Import Ban Of India) পর স্থলবন্দর দিয়ে ওপার বাংলার পোশাক আর ভারতে আসতে পারছে না, ভারতের এই কড়া সিদ্ধান্তের প্যাঁচে পড়ে এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চিঠি দিল সেদেশের রেডিমেড পোশাক নির্মাতাদের সংগঠন বিকেএমইএ।
নিষেধাজ্ঞা অন্তত 3 মাসের জন্য তুলে দিক ভারত
বাংলাদেশের প্রথম সারির বেশকিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, স্থলপথে ভারতের কোপ পড়ায় এবার বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক নির্মাণের সংগঠন বিকেএমইএ-র তরফে চিঠি গিয়েছে ওপার বাংলার প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের দপ্তরে। জানা যাচ্ছে, ওই চিঠিতে সংগঠনটি দাবি করেছে, অন্তত 3 মাসের জন্য হলেও যেন স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানির বিধি-নিষেধ স্থগিত করা হয়।
ইউনূস সরকার এমন কোনও ব্যবস্থা করুক যাতে ভারত কম করে হলেও 3 মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এ বিষয়ে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের আবেদন জানানো হয়েছে বাংলাদেশ রেডিমেড পোশাক নির্মাতাদের সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম তাদের সংবাদ পৃষ্ঠায় দাবি করেছে, ওপার বাংলার রেডিমেড পোশাক নির্মাতাদের সংগঠন সভাপতি মহম্মদ হাতেম বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ওই চিঠিটি দিয়েছেন। চিঠি পৌঁছেছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকেও।
চিঠিতে ঠিক কী বলা হয়েছিল?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক নির্মাণকারীদের সংগঠন সভাপতি মহম্মদ হাতেম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যে চিঠি দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, স্থলবন্দরে রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ে ভারতের বিধি-নিষেধের কথা জানানোর পর বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উদ্যোগে ও বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে দুটি বৈঠক হয়েছে।
তাতে সকলেই জানিয়েছেন, সচিব পর্যায়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে তাড়াতাড়ি একটি বৈঠক প্রয়োজন। কেননা, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্থলবন্দর গুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যেই বহু পণ্য সীমান্তে আটকে রয়েছে। দিল্লির এমন কঠোর সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
অবশ্যই পড়ুন: ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে খেলা ঘুরে গেল বাংলাদেশে, তৈরি নতুন ছক
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কাতর অনুরোধ ব্যবসায়ীদের
বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক প্রস্তুতকারকদের সংগঠনটির তরফে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের খতিয়ান প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কমপক্ষে 80 শতাংশ রপ্তানি পণ্য বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। যার মধ্যে বেশিরভাগই পোশাক। ওই খতিয়ানে জানানো হয়, গত 10 মাসে স্থলপথে কম করে 12 হাজার কোটি টাকার পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে পৌঁছেছে।
এমন হিসেব দেখিয়ে ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পোশাক নির্মাতাদের একান্ত অনুরোধ, ভারতের নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের পোশাক নির্মাতারা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে, আগামীতেও আরও বড় ক্ষতি হতে চলেছে। ভারত সরকার যাতে অন্তত 3 মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সেজন্য অনুরোধ করতে হবে। বর্তমানে যে পণ্য প্রক্রিয়াজাত অবস্থায় আছে সেইসব পণ্যগুলি দিল্লি যাতে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখে, তার অনুরোধও করতে হবে।