নয়া দিল্লিঃ মলদ্বীপের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপ সম্প্রতি সেই দেশের নাগরিকদের জন্য বিদেশি মুদ্রা যেমন ডলার ও ইউরো-র খরচের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়মে পরিবর্তন এনেছিল। এই পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে অর্থনৈতিক লেনদেনে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করে। একইসঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ক এই খরচের সীমা বেঁধে দেওয়ার কারণে দেশের নাগরিকদের মধ্যে একটি বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে। পাশাপাশি, মলদ্বীপে গণঅভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। এর ফলে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত।
জানা গেছে, মলদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় মুদ্রার দাম কমে যাওয়ার কারণে ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপক এই নতুন নিয়মাবলী চালু করতে বাধ্য হয়েছে। তবে সম্প্রতি, পুলিশ মনে করছে যে এই বৈদেশিক মুদ্রা খরচের সীমা বেঁধে দেওয়া মইজ্জু সরকারের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র করে গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা ছিল। এক্ষেত্রে পুলিশের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু চ্যাটবট ব্যবহার করে মানুষকে পথে নেমে অভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য উত্যক্ত করা হচ্ছিল। যদিও শেষমেষ সেই আশঙ্কা কেটে গিয়েছে মইজ্জু সরকারের উপর থেকে।
ঠিক কি ঘটেছিল মলদ্বীপে?
কিছুদিন আগেই ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপ একটি বিবৃতি জারি করে দেশের সব রুফিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত ধরণের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন স্থগিত করে দেয়। এর ফলে সেই দেশের নাগরিকরা তাঁদের ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড থেকে ডলার বা ইউরো খরচ করে জিনিস কিনতে পারছিলেন না। এক্ষেত্রে খরচের সীমাও বেঁধে দেয় এই ব্যাঙ্ক। আর যেহেতু ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপে সরকারের ৬২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে, তাই এই সিদ্ধান্তের সরাসরি প্রভাব মলদ্বীপ সরকারের উপর গিয়ে পড়ে। আর এখান থেকেই গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টার অভিযোগটি সামনে আসে।
ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তে সমস্যায় মইজ্জু সরকার
ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপের বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের এই নিয়ম পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন খাতে কিছু প্রত্যাশিত এবং কিছু অপ্রত্যাশিত প্রভাব পড়তে শুরু করে। দেশবাসী ব্যাপক সমস্যায় পড়েন। একইসঙ্গে সেই দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল মলদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে। পাশাপাশি, একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি বিরোধী বেশ কিছু চ্যাটবট সক্রিয় হয়। সব মিলিয়ে এই অবস্থায় একটা গণঅভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয় বলে অনুমান পুলিশের।
চাপে পড়ে নিয়ম প্রত্যাহার করল ব্যাঙ্ক
তবে শেষমেষ মলদ্বীপ মনিটরি অথরিটির চাপে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের এই নিয়মটি প্রত্যাহার করে নেয় ব্যাঙ্ক অফ মলদ্বীপ। রবিবার, একটি বিবৃতি জারি করে ব্যাঙ্ক জানায়, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা মলদ্বীপ মনিটরি অথরিটির নির্দেশে এই নিয়মটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হল’। এর পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া এই ষড়যন্ত্রের তদন্ত শুরু করেছে দেশের পুলিশ।