সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্বের বিরল খনিজ বাজারে দীর্ঘদিন ধরে একচেটিয়া আধিপত্য দখল করে রেখেছিল চীন। কিন্তু এবার সেই দাপট হারানোর পথে বসেছে প্রতিবেশি এই দেশ। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। সম্প্রতি চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের (CAS) গবেষকদের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এক ভয়ানক তথ্য।
কেন কমবে চীনের দখল?
আসলে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬০% বিরল খনিজের মালিকানা চীনের হাতে রয়েছে এবং প্রায় ৯০% খনিজ প্রক্রিয়াকরণ চীনেই সম্পন্ন হয়। কিন্তু বেশ কিছু সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের এই দখল কমে ২৮%-এ নেমে আসতে পারে। কিন্তু কেন? আসলে আফ্রিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার নতুন খনিজ উৎসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
২০৪০ সালের মধ্যে বড় ধাক্কা খাবে চীন
গবেষকরা কম্পিউটার মডেলিং-এর মাধ্যমে পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০৪০ সালের মধ্যে চীন খনিজ সম্পদে ব্যাপক ধাক্কা হবে। অর্থাৎ, একধাক্কায় ২৩ শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা। ফলে চীন এই খাতে নিজেদের আধিপত্য সম্পূর্ণ হারাতে পারে। নতুন খনিজ ভান্ডার আবিষ্কারের পাশাপাশি প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণেও এই পরিবর্তন হতে চলেছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ তাদের খনিজ খনির দিগন্ত খুলে দেওয়ার ফলে বিশ্ববাজারে চীনের আধিপত্য সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কেন দেশগুলি চীনের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে?
বেশ কিছু সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চীনের দক্ষিণ অঞ্চলের বিরল খনিজ সম্পদ এখন নতুন প্রতিযোগিতার মুখে পা দিয়েছে। বিশেষ করে গ্রিনল্যান্ডের কভানেফজেল্ড ক্ষেত্রে এবং দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি খনিজ প্রকল্প চীনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে। আর এই গবেষণা করেছেন CAS-এর গ্যানজিয়াং ইনোভেশন অ্যাকাডেমির বিজ্ঞানীরা। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিরল খনিজ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
বিরল খনিজের গুরুত্ব
আসলে বিরল খনিজ ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি কল্পনাই করা যায় না। স্মার্টফোন বলুন আর বৈদ্যুতিক গাড়ি, সব উচ্চপ্রযুক্তির যন্ত্রপাতিতে বিরল খনিজের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তাই চীনের বিরল খনিজে ভান্ডার এতদিন তাদের প্রযুক্তিগত দুনিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল। এমনকি আন্তর্জাতিক বাজারেও এটি চীনের জন্য অন্যতম অস্ত্র।
আরও পড়ুনঃ সোনা নাকি রুপো! স্বল্প, মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদে মুনাফার জন্য কোনটিতে বিনিয়োগ করা সঠিক?
ভবিষ্যতে কী পরিবর্তন আসতে পারে?
গবেষকরা মনে করছে, ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে বিরল খনিজের চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে। জানা যাচ্ছে, এর ফলে আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপ নতুন খনিজ সম্পদ বিকাশে আরো ভূমিকা রাখবে। এর ফলে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য ধীরে ধীরে কমে যাবে এবং বাজারে একাধিক উৎস তৈরি হবে।
তাহলে কী সত্যিই চীন দিনের পর দিন পিছিয়ে পড়বে? এই প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতে জানা যাবে। বিজ্ঞানীরা মনে করছে, বিশ্ববাজারে বর্তমান প্রবণতা চীনের জন্য মোটেও ভালো নয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |