বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চিনের সর্বগ্রাসী খিদে আজকের নয়! বিশ্বের বহু দরিদ্র দেশকে নিজের রাডারে এনে একে একে গিলে খাচ্ছে ড্রাগন (China)! তালিকায় পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো আরও একাধিক দরিদ্র দেশের নাম উঠে এসেছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক লোই ইনস্টিটিউটের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের মতো একাধিক দরিদ্র দেশের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে তাদের শুষে নিচ্ছে চিন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের অন্তত 94টি দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশে ঋণ বিতরণ করেছে জিনপিংয়ের দেশ। আর এর পরই এই দেশগুলি থেকে ঋণ আদায়ের নামে তাদের যাবতীয় সম্পদ বন্ধক রেখে, দেশ গুলির বাজারে আধিপত্য কায়েম করেছে চায়না। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, চলতি বছরই চিনের বিপুল ঋণের বোঝার চাপে পড়ে একাধিক দেশের অর্থনীতি কার্যত তলিয়ে যাবে।
2025 বর্ষে 3 লক্ষ কোটি টাকা আদায় করবে চিন
অস্ট্রেলিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরেই বিশ্বের একাধিক দেশের কাছ থেকে কমপক্ষে 3 লক্ষ কোটি টাকা আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ড্রাগনের দেশ। রিপোর্ট যা বলছে, এই দেশগুলির মধ্যে অন্তত 70টি দেশের কাছ থেকে কম করে 1.90 লক্ষ কোটি টাকা তুলে আনবে, জিনপিং সরকার। ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, এবছর চিনের ঋণ মেটাতে গিয়ে বিশ্বের বহু দরিদ্র দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বাজেট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার জেরে দেশগুলির পরবর্তী প্রজন্মও একপ্রকার ধ্বংসের মুখে পৌঁছবে।
কবে এই ঋণ প্রদানের নাটক শুরু করেছিল চিন?
জানা যায়, 2013 সালে রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং প্রথমবারের মতো বিআরআই প্রকল্প চালু করেছিলেন। আর এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বের 150টি দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশকে যুক্ত করা হয়েছিল। জানিয়ে রাখি, এই দেশগুলির GDP-তে 40 শতাংশ ভাগ রয়েছে চিনের। বলা বাহুল্য, 2017 সালে চিন বিশ্বের একাধিক দেশকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করার পর আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার বা IMF ও বিশ্ব ব্যাঙ্ককে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বড় ঋণদাতা হয়ে উঠেছিল।।
কোন দেশগুলিকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে চিন?
বর্তমানে বিশ্বের 52টি দেশ চিনের কাছে সবচেয়ে বড় ঋণগ্রস্থ। বলে রাখি, চিনের দেওয়া 33 লক্ষ কোটি টাকার ঋণ বিশ্ব ব্যাঙ্কের নজরের বাইরে। বলা বাহুল্য, বর্তমানে চিনের কাছে সবচেয়ে বেশি ঋণী পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদের এই দেশকে সর্বোচ্চ 2.27 লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ড্রাগনের দেশ। একইভাবে, চিনের থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাঙ্গোলা। এই দেশটিকে 1.79 লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে চিন। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কাকেও 76,140 কোটি টাকা, ইথিওপিয়াকে 58,140 কোটি টাকা, কেনিয়াকে 57,319 কোটি টাকা ও বাংলাদেশকে 52,186 কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে চিন।
অবশ্যই পড়ুন: জবর দখল হয়ে যাচ্ছে মন্দিরের জমি, পাকিস্তানের রাজপথে বিক্ষোভ হিন্দুদের
ঋণ প্রদানের পিছনে চিনের ভয়ঙ্কর উদ্দেশ্য
একাধিক রিপোর্ট এ কথা স্বীকার করেছে যে, বিশ্বের দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলিকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়ার নেপথ্যে চিনের মানবিক উদ্দেশ্য নয় বরং সর্বগ্রাসী মনোভাবই দায়ী। জানিয়ে রাখি, এই দেশগুলিকে সাহায্য করার পর চিন তাদের অর্থ ফিরে পেতে চায় না, বরং ওই দেশগুলির সব সম্পদ কব্জা করতে চায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, চিন ভেনিজুয়েলা ও অ্যাঙ্গোলার মতো দেশগুলিকে অর্থ সাহায্য করার পর বর্তমানে দেশগুলির প্রাকৃতিক সম্পদ শুষে নিচ্ছে। আগামী দিনে চিনের এই উদ্দেশ্যে পা জড়াবে অনেকেই।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |