বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতের পর এবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লাল চোখ দেখবে চিন! জানা যাচ্ছে, ড্রাগনের পণ্যে 50 থেকে 100 শতাংশ শুল্ক আরোপের আর্জি জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট NATO-র সদস্য দেশগুলিকে চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প। এবার তারই প্রতিক্রিয়া জানালো বেইজিং।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাপাদাপির মাঝে শুল্ক সংক্রান্ত পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়ায় স্লোভানিয়া সফর থেকে চিনের বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং ই কয়েকটি শব্দে আমেরিকান প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনার জবাব দিয়েছেন (China Replied Donald Trump)। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, ওই দু লাইনের বক্তব্যেই আমেরিকার প্রতি চিনের মনোভাব এবং অবস্থান কার্যত স্পষ্ট।
চিনের জবাব
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প NATO-র সদস্য দেশগুলিকে বেইজিংয়ের উপর 100 শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। এমন খবর কানে আসতেই এবার সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানালেন চিনের বিদেশ মন্ত্রী। ওয়াং ই বললেন, চিন কোনও দিনও যুদ্ধের পরিকল্পনা করে না, যুদ্ধে যোগদান করে না। সংঘাত বা যুদ্ধ কখনই সমস্যার সমাধান নয়, বরং সমস্যাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। চিনা বিদেশমন্ত্রীর এমন মন্তব্য উল্লেখ করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ ট্রাম্প!
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে একেবারে উঠে পড়ে লেগেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এজন্য অবশ্য ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেন্সকির সাথে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয়ে গিয়েছে তাঁর। সম্প্রতি যুদ্ধ থামিয়ে কৃতিত্ব অর্জন করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথেও বৈঠক সারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু কোনও মন্ত্রেই লক্ষ পূরণ হয়নি। বিশ্লেষক মহলের একাংশ বলছেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ ট্রাম্প। তাই এবার শুল্ক নিয়ে গাজোয়ারি শুরু করেছেন তিনি।
অবশ্যই পড়ুন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিএবি সভাপতি হচ্ছেন সৌরভ গাঙ্গুলি! কীভাবে?
সম্প্রতি রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এনে দুই ধাপে 50 শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে সাহায্য করছে ভারত। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য উড়িয়ে দিচ্ছে নানা মহল। অনেকেই বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে না পেরে এখন অযৌক্তিক প্রলাপ বকছেন তিনি। এদিকে তেলের নিরিখে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রেতা চিন। ভারতের পাশাপাশি ড্রাগনের উপরেও মোটা শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে বলতে শোনা গিয়েছিল, চিনের উপর 200 শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হতে পারে… কী হয় দেখতে থাকুন…
মনে করা হচ্ছে, পূর্বের হুঁশিয়ারিতে কাজ না হওয়ায় এবার একেবারে কঠিন পরিকল্পনা ফেঁদেছেন ট্রাম্প। আসলে, শুল্ক নিয়ে দাপাদাপিতে এশিয়ার দুই বড় শক্তি ভারত এবং চিন কাবু না হওয়ায় এখন নিজের মান বাঁচাতে আরও কঠোর হওয়ার পথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও বিশ্লেষক মহল দাবি করছে, ভারতের পাশাপাশি মার্কিন হুঁশিয়ারি বা নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করে না চিনও।