তৈরি হচ্ছে নতুন ইতিহাস! দূরত্ব কমছে ভারত, আফ্রিকার

Published on:

india map

শ্বেতা মিত্রঃ হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপর ভারতের খুব কাছাকাছি চলে আসতে চলেছে আফ্রিকা। শুনে চমকে গেলেন তো? ভাবছেও এও সম্ভব? কিন্তু শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। একটা সময় ছিল যখন ভারত ব্রিটিশদের দখলে ছিল কিন্তু ইতিহাসের সেই কালো অধ্যায় টাও শেষ হয়েছিল একটা সময় ভারত এখন পূর্ণ স্বাধীন দেশ। কিন্তু ভারতের অদূরে এমন এক জায়গা আছে যে যেটি কিনা এখনো অবধি ব্রিটিশদের দখলে আছে। তবে সেই দিন আর হয়তো বেশি দূরে নয় যখন সেই জায়গাটিও ব্রিটিশদের থেকে দখলমুক্ত হবে।

ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতা পাবে এই জায়গা?

WhatsApp Community Join Now

আজ কথা হবে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে। এছাড়া রয়েছে ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া, যেখানে মার্কিন ও যুক্তরাজ্যের বাহিনী তাদের সামরিক ঘাঁটি বজায় রেখেছে। যদিও মরিশাস এটিকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। আন্তর্জাতিক আদালতে এই নিয়ে মামলাও হয়েছে একাধিকবার। তবে এবার এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নিয়ে ঐতিহাসিক সমঝোতা হয়েছে। দিয়েগো গার্সিয়াসহ চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব মরিশাসের কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা করেছে ব্রিটেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। যদিও এই স্বাধীনতার পেছনে ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সেটা হয়তো অনেকেই জানেন না।

জানুন ইতিহাস

এই দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ভারত স্বাধীনতা লাভের প্রায় ২১ বছর পর মরিশাস ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। তবে ব্রিটেন চাগোস দ্বীপপুঞ্জ ছাড়েনি। তবে যত সময় এগোয় ততই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। পরবর্তী কয়েক বছরে ব্রিটিশরা স্থানীয় লোকজনকে একে একে করে এই দ্বীপপুঞ্জ থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে চেগোস আমেরিকার সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। মামলাটি আন্তর্জাতিক আদালতে যায়। এক্ষেত্রে জয় হয়েছে মরিশাসের। এখন ব্রিটেন অবশেষে ওই এলাকা ছাড়তে রাজি হয়েছে। কিন্তু চেগোস দ্বীপপুঞ্জের সব থেকে বড় দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ার দখল ছাড়ছে না ব্রিটেন। এই দীপ থেকে ভারত মহাসাগরে উপর নজরদারি চালাবে ব্রিটেন বলে জানানো হয়েছে।

ভারতের ভূমিকা

এই অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক হিন্দু বংশোদ্ভূত মানুষের বাস। বলা হয়, নাকি ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এখানে বাস করেন। এদিকে মরিশাসের কাছে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্বের ঐতিহাসিক হস্তান্তর সুরক্ষিত করতে ভারত নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আলোচনার সময় ভারত ঔপনিবেশিকতার ‘শেষ অবশিষ্টাংশ’ ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয়তার কথা জোরাল ভাবে তুলে ধরেছিল। ব্রিটেন ও মরিশাসের পক্ষ থেকেও যৌথ বিবৃতিতে নয়াদিল্লির ভূমিকার কথা স্বীকার করা হয়েছে।

যদিও এহেনও ঘটনার পর ভারত ও আফ্রিকার মধ্যে অনেকটাই দূরত্ব কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার অবধি এই দূরত্ব কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। নিশ্চয়ই ভাবছেন কীভাবে? তাহলে জানিয়ে রাখি, আফ্রিকান ভূখণ্ড গুয়ার্দাফাই অন্তরীপ ভারতের অনেক কাছে রয়েছে। সেখান থেকে ভারতের গুজরাত উপকূলের দূরত্ব প্রায় ২,২০০ কিলোমিটার। ওদিকে ভারতের কন্যাকুমারী থেকে চেগোস দ্বীপপুঞ্জের নিকটতম দ্বীপের দূরত্ব হল প্রায় ১,৫৭৫ কিলোমিটার। ব্রিটেন এই দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ মরিশাসের হাতে তুলে দিলে ভারতের থেকে আফ্রিকার দূরত্ব কমে যাবে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বলে দাবি।

সঙ্গে থাকুন ➥
X