সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ বা IPL এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ললিত মোদী সম্প্রতি ভানুয়াতু (Vanuatu) নামের একটি ছোট দ্বীপরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি বর্তমানে ভারতীয় হাই কমিশনের কাছে তার পাসপোর্ট জমা দিতে আবেদন করেছেন। তবে আপনারা কি ভানুয়াতু দ্বীপটি সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য জানেন, যেগুলি এই দেশটিকে অনন্য করে তুলেছে? চলুন আজকের প্রতিবেদনে ভানুয়াতু সম্পর্কে কিছু অজান তথ্যের সন্ধানে নামি।
ভানুয়াতু ৮৩টি আগ্নেয়দ্বীপ নিয়ে গঠিত
ভানুয়াতু দ্বীপরাষ্ট্রটি ৮৩টি আগ্নেয় দ্বীপ নিয়ে গঠিত। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। তবে এর মধ্যে ৬৫টি আগ্নেয়দ্বীপ বসবাসের উপযুক্ত। এই দ্বীপগুলি অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের ঠিক উত্তর-পূর্বে অবস্থান করছে। দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দ্বীপটি হল ‘এস্পিরিটু সান্তো’ দ্বীপ, যার আয়তন প্রায় ৩৯৫৫ বর্গকিলোমিটার, যা ভানুয়াতুর মোট আয়তনের প্রায় ৩২%।
ভানুয়াতুর সক্রিয় আগ্নেয়গিরি
ভানুয়াতুর কিছু দ্বীপে রয়েছে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এর মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত হল ‘ইয়াসুর’। এই আগ্নেয়গিরিটি প্রায় ৮০০ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে লাভা নির্গত করছে এবং এটি বিশ্বের অন্যতম একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। তবে দেশের অন্যান্য দ্বীপগুলিতেও প্রচুর আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যা দেশটির প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রধান কারণ।
ভানুয়াতুর জনসংখ্যা
২০২০ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ভানুয়াতুর জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৩ লক্ষ ১৯ জন। হ্যাঁ, একদম ঠিকই শুনেছেন। এই সংখ্যা ভারতের নয়ডা শহরের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও কম। দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখানে খ্রিস্টান ধর্মালম্বি। এর মধ্যে প্রোটেস্ট্যান্টরা সর্বাধিক। এই দেশের জাতীয় ‘বিসলামা’। তবে ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষাও সরকারি ভাষা হিসেবে গৃহীত হয়।
ভানুয়াতু এক সময় ছিল অ্যাংলো ফরাসি যৌথ উপনিবেশ
ভানুয়াতু অঞ্চলের ইতিহাস বেশ বৈচিত্র্যময়। ১৯০৬ সালে ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য এই দ্বীপপুঞ্জের উপর যৌথ শাসন প্রতিষ্ঠা করে যা অ্যাংলো-ফরাসী কন্ডোমিনিয়াম নামে তখন পরিচিত ছিল। ১৯৮০ সালে এই অঞ্চলের স্বাধীনতা লাভের পর এর নামকরণ করা হয় ভানুয়াতু।
ভানুয়াতুর আয়ের ৩০% আসে নাগরিকত্ব বিক্রির মাধ্যমে
ভানুয়াতুর অর্থনীতি মূলত কৃষি এবং মাছ ধরার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। তবে একাধিক আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী এবং ধনী মানুষরা ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব কেনার জন্য আবেদন করে থাকে। যার ফলে দেশটির আয়ের একটি বড় অংশ আসে নাগরিকত্ব বিক্রির মাধ্যমে। ভানুয়াতু বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ‘সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট’ প্রোগ্রাম চালায়, যা বিশ্বের ধনী মানুষদের আকর্ষণ করে। এখানে প্রতি নাগরিকত্বের জন্য মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার থেকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হয়। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১.১৮ কোটি টাকা থেকে ১.৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত দাঁড়ায়।
এক্ষেত্রে বলে রাখি, এটা যদি শুধুমাত্র ধনীদের জন্য একটু সুযোগ তা নয়। বিশ্বের নানা দেশের নাগরিকরাও এখানে গোল্ডেন পাসপোর্ট পেয়ে নানারকম সুবিধা লাভ করে। বিশেষ করে ব্যবসায়ী মহল এবং সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারীরা এই সুবিধা বেশি গ্রহণ করে। এভাবেই ভানুয়াতু তার এক্সক্লুসিভ সিটিজেনশিপের মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম ব্যক্তিগত দ্বীপপুঞ্জ হয়ে উঠেছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |