কলকাতাঃ মাউন্ট এভারেস্ট নিয়ে সমগ্র বিশ্ববাসীর কৌতূহলের শেষ নেই। পর্বতারোহীদের কাছে মাউন্ট এভারেস্টে ওঠা স্বপ্ন থাকে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন গুটি কয়েকজনই। কিন্তু এবার এই মাউন্ট এভারেস্ট নিয়ে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য প্রকাশ্যে উঠেছে। জানলে অবাক হবেন, বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের সবথেকে উঁচু পাহাড়ে জঞ্জালের স্তুপ জমছে, আর যা পরিষ্কার করতে গিয়ে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে শেরপাদের।
মাউন্ট এভারেস্টে ৪০-৫০ টন আবর্জনা মজুদ
সম্প্রতি যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে উঠে এসেছে সেটা অনুযায়ী, মাউন্ট এভারেস্টের সর্বোচ্চ ক্যাম্পে ৪০-৫০ টন আবর্জনা মজুদ রয়েছে। আর তা পরিষ্কার করতে অনেক বছর লেগে যাবে বলে মনে করছেন সকলে। মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ার কাছে হিমায়িত দেহ অপসারণ এবং আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য শেরপা ও তাঁর দল বছরের পর বছর ধরে কাজ করছেন। তবে মাউন্ট এভারেস্টের সৌন্দর্য দেখলে চমকে যাবেন যে কেউ, কিন্তু এই সুন্দর জায়গা এখন ভরে উঠছে আবর্জনায়। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতের সৌন্দর্য ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ আবর্জনা ও আবর্জনা পড়ে থাকে, যা পরিষ্কার করতে অনেক বছর লেগে যাবে।
এই জঞ্জাল পরিষ্কার করতে অর্থায়ন করে নেপাল সরকার। নেপাল সরকারের সাহায্যে সেখানকার সেনা ও শেরপাদের একটি দল এ বছরের পর্বতারোহণ মরসুমে এভারেস্ট থেকে ১১ টন (২৪,০০০ পাউন্ড) আবর্জনা, চারটি মৃতদেহ এবং একটি কঙ্কাল উদ্ধার করেছে। শেরপাদের এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন অঙ্গ বাবু শেরপা। আর এই আবর্জনা উদ্ধার হয়েছে দক্ষিণ কোলে নামক জায়গা থেকে। অনুমান, এখনও অবধি ৪০ থেকে ৫০ টন বর্জ্য থাকতে পারে। সাউথ কোল পর্বতারোহীদের চূড়ায় ওঠার আগে শেষ ক্যাম্প।
বেগ পেতে হবে কর্মীদের
টন টন আবর্জনা পরিষ্কার করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে সাফাই কর্মীদের বলে মনে হচ্ছে। এক শেরপা বলেন, “এভারেস্টে ফেলে যাওয়া আবর্জনার মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছে পুরানো তাঁবু, কিছু খাবারের প্যাকেজিং এবং গ্যাস কার্তুজ, অক্সিজেনের বোতল, তাঁবুর প্যাক এবং তাঁবুতে ওঠা এবং বাঁধার জন্য ব্যবহৃত দড়ি। ১৯৫৩ সালে প্রথম এই শৃঙ্গ জয়ের পর থেকে হাজার হাজার পর্বতারোহী এতে আরোহণ করেছেন। দলের শেরপারা অনেক উঁচু থেকে আবর্জনা ও মৃতদেহ সংগ্রহ করেছিলেন।”
এভারেস্ট থেকে কীভাবে নোংরা পরিষ্কার করা হয় জানেন?
শেরপা অঙ্গ বাবুর মতে, সাউথ কোল অঞ্চলে কাজের জন্য সকলের কাছে আবহাওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এখানে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। হাওয়া কখন তুষারঝড়ের রূপ নেবে কেউ বলতে পারে না। সেইসঙ্গে তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। অক্সিজেনের মাত্রা খুব কমে গেলে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন। আবর্জনা খনন করাও একটি বড় কাজ, কারণ এটি বরফের ভিতরে জমা হয়। সাউথ কোলের কাছে বরফের গভীরে জমে থাকা একটি মৃতদেহ খুঁড়ে বের করতে দুই দিন সময় লেগেছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে দলটিকে নিচের শিবিরে ফিরে যেতে হয়। এরপর আবহাওয়ার উন্নতি হলে আবার কাজ শুরু করতে হবে।