সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: জাতিসংঘের মঞ্চে আবারও পাকিস্তানের ঘোমটা টেনে খুলল ভারত! দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের সম্পর্ক (India Pakistan Issue) টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। এমনকি কাশ্মীর ইস্যুকে সামনে রেখে সন্ত্রাসের দেশ ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করেও বেড়াচ্ছে দিনের পর দিন। তবে এবার সেই মিথ্যা প্রচারেরই মুখোশ টেনে খুলল ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পর্বথনেনি হরিশ পাকিস্তানের কূটনৈতিক ভন্ডামির তীব্র কটাক্ষ করলেন।
নিজেদের নাগরিকের উপরেই বোমা ফেলে পাকিস্তান
জাতিসংঘের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতের প্রতিনিধি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পাকিস্তান পৃথিবীর এমন এক দেশ, যারা নিজেদের জনগণের উপরেই বোমা ফেলে, অত্যাচার করে। নিজেদের নাগরিকের উপরে গণহত্যা চালায় তারা। তারপরও আন্তর্জাতিক মহলে নিজেকে মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরে। তিনি আরও বলেছেন, প্রতি বছর পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পুরনো অভিযোগ তোলে। অথচ তারা কখনও স্বীকারই করে না যে, তারা নিজেরাই ভারতের ভূখণ্ডের একটি অংশ জোর জবরদস্তি দখল করে রেখেছে।
“A country that bombs its own people, conducts systematic genocide can only attempt to distract the world with misdirection and hyperbole”, India’s envoy to UN @IndiaUNNewYork @AmbHarishP slams Pakistan after the country rakes anti India issues at UNSC pic.twitter.com/t80HYwJlVz
— Sidhant Sibal (@sidhant) October 7, 2025
4 লক্ষ মহিলাকে গণধর্ষণ
উল্লেখ্য, শুধু বোমা মারার ঘটনাতেই থেমে থাকেনি ভারতের প্রতিনিধি। তিনি ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর অধ্যায় তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, এটা সেই দেশ, যাদের সেনাবাহিনী 1971 সালে অপারেশন সার্চলাইটের নামে নিজেদের জনগণের উপরেই গণহত্যা চালিয়েছে। এমনকি সেই সময় মোট 4 লক্ষ মহিলাকে গণধর্ষণ করেছিল তারা, আর হাজার হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। পাকিস্তানের এই অমানবিক অতীত তারা কখনওই ঘোমটার আড়ালে লুকিয়ে রাখতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের এই সভায় আলোচনার মূল বিষয় ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠায় নারীদের ভূমিকা। আর উক্ত আলোচনায় পাকিস্তান যখন ভারত বিরোধী অভিযোগ তোলা শুরু করে, তখন ভারতও তাদের দাবি গুলির সপাটে জবাব দেয়। পর্বথনেনি হরিশ জাতিসংঘে ভারতের নারী নেতৃত্বের উদাহরণ হিসেবে ড: কিরণ বেদির নাম তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ড: কিরণ বেদি ভারতের প্রথম মহিলা আইপিএস অফিসার এবং 2003 সালে জাতিসংঘ পুলিশ বিভাগের প্রথম মহিলা পরামর্শদাতা ও প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। ভারত সবসময় নারী শক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। ভারতের রেকর্ডে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস করা চলবে না।
আরও পড়ুনঃ বিজেপি নেত্রীর বাড়ি থেকে ২২ লক্ষ টাকা চুরি, দিল্লিতে এনকাউন্টার নেপালের কুখ্যাত গ্যাংস্টার
এমনকি পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে ভারতের প্রতিনিধি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে দেশ নিজের জনগণকে রেহাই দিতে পারে না, তাদের কাছ থেকে মানবাধিকারের পাঠ নেওয়ার কোনওরকম প্রয়োজন নেই। সব কিছুই বিলাসিতা মাত্র। আর ভারতের এই জবাব শুধুমাত্র জাতিসংঘের সভার মধ্যে নয়, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও ঘোমটার আড়ালে পাকিস্তানের মুখোশ একেবারে যে টেনে খুলে নিয়ে এসেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।