পাকিস্তান বর্তমানে তাদের নিজেদের তৈরি ফাঁদেই আটকে পড়েছে। একথা তো সবারই জানা যে, দীর্ঘ সময় ধরে চিনের সহায়তায় পাকিস্তান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র অর্থাৎ মিসাইল প্রোগ্রামকে উন্নত করেছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে চারিদিকে জানাজানি হয়ে যায়। আর তারপর থেকেই পাকিস্তানের দিকে ভ্রু তুলেছে আমেরিকা। সাথে ইরানের প্রেসিডেন্টের পাকিস্তান সফর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরো গোঁসা করেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্টের পাকিস্তান সফর সম্পর্কে আমেরিকা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, কেউ যদি তেহরানের সাথে ব্যবসা করার কথা ভাবে তাহলে তাদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। ইরানিয়ান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির তিনদিনের পাকিস্তান সফর শেষ হয়েছে, তারপরই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। পাকিস্তান সফরে রাইসি দুই দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য সম্পর্কে নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে ইরানের সাথে নিজেদের সম্পর্ক উন্নত করার জন্য সচেষ্ট পাকিস্তান সরকার। বিষয়টি সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ইরানের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করলে তাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। মার্কিন দেশের সতর্কতা এমন সময়ে এসেছে যখন মাত্র কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত সামগ্রী রপ্তানির জন্য চীনের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানি ও আধিকারিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল নাগাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করে চাথ সংস্থার ওপর। তাদের দোষ এটাই যে, তারা পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামে সহায়তা করে। তালিকায় রয়েছে বেলারুশের একটি কোম্পানি এবং চীনের তিন কোম্পানি। তবে চীন শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয়, পাকিস্তানের অন্দরে পারমাণবিক চুল্লিও নির্মাণ করছে। মোট চারটি পাওয়ার রিঅ্যাক্টর তৈরি করছে তারা।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবথেকে সস্তার পাসপোর্টে দ্বিতীয় নম্বরে ভারত, প্রথম কে?
পাকিস্তানকে সহায়তা করার জন্য আমেরিকা বেশ রুষ্ট। এবং তারা মনে করে এই কাজের ফলে চীন নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার গ্রুপের (NSG) প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন করেছে। কারণ NSG নির্দেশিকা অনুযায়ী তারা পাকিস্তানের মতো দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণও সমর্থন করেনা। উল্লেখ্য পাকিস্তানের কাছে ১৬০ থেকে ১৬৫টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড রয়েছে এবং সেইসাথে এমন মিসাইল রয়েছে যাদের রেঞ্জ রয়েছে ২০০০ কিমি বা তার বেশি। পাকিস্তানের এই অস্ত্রাগার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ উদ্বেগের কারণ। এছাড়া পাকিস্তান Nuclear Proliferation Treaty তেও স্বাক্ষর করেনি। এমতবস্থায় চীনের পাকিস্তানকে সাহায্য করা উচিৎ হয়নি। তাই তাদের তিনটি কোম্পানি পড়েছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে।