মাসখানেক আগেই এক গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী ছিল বাংলাদেশ। কোটা বিরোধী আন্দোলন বাড়তে বাড়তে একটা সময় সেটাই বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করে। তারপরেই বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। তবে, হাসিনা সরকারের অপসারণের পর বাংলাদেশে শুরু হয় বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা। আর এই কারণে ভারত সরকার ও ভারতীয় কোম্পানিগুলোর নির্মাণাধীন প্রায় সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের এই অস্থিরতার কারণে ইতিমধ্যে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজেল সরবরাহের কাজও স্থগিত রয়েছে বলে জানা গেছে। উভয় দেশের সীমান্তে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যও অনেকাংশে বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এখন পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
চিড় ধরছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে?
বাংলাদেশের এই অস্থিরতা এবং তার প্রভাব যেভাবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে পড়ছে, তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন দেশের বিদেশ মন্ত্রক। এই মর্মে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেছেন, “সেখানে আমাদের যে সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প চলছিল, তার সবকটি স্থগিত করা হয়েছে। এইসব প্রকল্পে কর্মরত সব আধিকারিক ও শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করারছেন। পরিস্থিতি ঠিক হলে এবং সেখানের আইনশৃঙ্খলা আবার কার্যকর হলে আমরা পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে আরেকবার দেখব। আমরা সেখানকার সরকারের সঙ্গে কথা বলব।”
ক্ষতির মুখে ভারত-বাংলাদেশ ডিজেল পাইপলাইনের কাজ
পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত বিছানো ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের কারণে ডিজেল এবং বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে জয়সওয়াল বলেন, “হ্যাঁ, প্রতিটি প্রকল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি সবাইকে প্রভাবিত করেছে।” উল্লেখ্য, ১৩৭.১ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনটি ভারতের আর্থিক সহায়তায় ইনস্টল করা হয়েছে, যা বছরে ১ মিলিয়ন টন ডিজেল বাংলাদেশে সরবরাহ করার ক্ষমতা রাখে। এর সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে উভয় দেশই এখন পেট্রোল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেখানে ভারত থেকে বাংলাদেশে বছরে ২৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাও রয়েছে। এমনকি এই বিদ্যুতের জন্য এক বিলিয়ন ডলারের পেমেন্টও এখনো পায়নি বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশে বন্যা নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে
সম্প্রতি, বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যা হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই অবস্থায় কিক্সহু আমেরিকান টিভি চ্যানেল এবং বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরকে ভারত আবারও পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেছে যে ভারতের কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এইসব খবর নিয়ে তিনি জানান, “এই ধরনের খবর সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। ভারত ক্রমাগত বন্যা সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশের সঙ্গে শেয়ার করছে।”