বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: পাক সেনাবাহিনীতে (Pakistan Army) এবার বাংলাদেশের ছবি! হ্যাঁ, সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থানের জল্পনা উসকে গিয়েছিল। এবার সেই ঘটনার পরই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অন্দরে জোরালো বিদ্রোহের খবর মিলল। সূত্রের খবর, প্রকাশ্যে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের পদত্যাগ দাবি করেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা। সেনা প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে তাঁকে নাকি একটি কড়া চিঠিও দিয়েছে পাক সেনাবাহিনীর জুনিয়র সদস্যদের একাংশ।
চিঠিতে পাক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে বিরাট অভিযোগ
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্দরে বিদ্রোহের আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে। সেনাবাহিনীর জুনিয়র সদস্যরা, সেনাপ্রধান জেনারেল মুনিরকে একটি কড়া চিঠি দিয়েছেন। এই চিঠিতে সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা অভিযোগ করেছেন, জেনারেল মুনির পাকিস্তানি সেনাকে রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করছেন।
চিঠিতে, সেনাবাহিনীর অফিসাররা ওই সেনাপ্রধানের পদত্যাগ দাবি করে, জোরালো হুশিয়ারি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে এর ফল ভুগতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পাকিস্তানের কর্নেল থেকে শুরু করে মেজর, ক্যাপ্টেন বিভাগের অফিসার ও সেনা জাওয়ানরাও নাকি এই চিঠিতে সই করেছেন।
মুনিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা ওই চিঠিতে সেনাপ্রধান জেনারেল মুনিরকে 1971 সালের পাকিস্তানি নেতৃত্বের সঙ্গে তুলনা করে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সেনা প্রধানকে সতর্ক করা হয়েছে, 1971 সালের নেতৃত্বের ভুলে পাকিস্তান লজ্জাজনক পরাজয় দেখেছিল। তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের মতো অবস্থা।
মুনিরের নেতৃত্বেও পাকিস্তান সেই পথেই হাঁটছে। চিঠিতে মূলত সেনা জেনারেলের পদত্যাগের ওপর জোর দিয়ে বলা হয়, পদত্যাগ করুন অথবা এর ফল ভোগ করুন। চিঠিতে লেখা হয়েছে, এটা আমাদের তরফে কোনও রকম আবেদন নয়। এটি কোনও আপসোসের বিষয়ও নয়।
চিঠিতে আর কী কী অভিযোগ করা হয়েছে?
পাক সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা ওই চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানি ভিন্নমত পোষণকারীদের নৃশংসভাবে দমিয়ে রাখা হয়েছে। পাকিস্তানের রাস্তায় গৃহবধূদের পিটিয়ে খুন করার মতো ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কারাগারে আটকে রাখা থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের ওপর গুলি চালানো সবই হয়েছে এই সেনা প্রধানের নেতৃত্বেই!
চিঠিতে আরও বলা হয়, ক্ষমতার লোভে দেশের অর্থনীতিকে তলিয়ে যেতে দিয়েছেন মুনির…. বছরের পর বছর ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিজের হাতে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। জুনিয়র সেনা জওয়ান থেকে শুরু করে কর্তারা দাবি করেন, আমরা দিনের পর দিন অনাহারে মরে যাচ্ছি। আর আপনি আপনার মেয়াদ 2027 পর্যন্ত বাড়িয়ে নিচ্ছেন। জনরোষ একদম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।
বর্তমানে দেশের জনগণ, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। পথে নেমেছে শিশুরাও। চেক পয়েন্টে ছোট ছোট বাচ্চারা পাথর ছুঁড়ছে। নিজের দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে একেবারে খারাপ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন আপনি। চিঠিতে আরও বলা হয়, আমাদের দেশ ও দেশের মর্যাদাকে একেবারে নর্দমায় টেনে নিয়ে যাচ্ছেন আপনি। আপনার এই পদে থাকার কোনও যোগ্যতা নেই। আপনার সময় শেষ। যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগ করুন, না হলে আমরা আপনার চুরি করা জিনিসপত্র ফিরিয়ে নেব… প্রয়োজন হলে বল প্রয়োগ করব…
প্রসঙ্গত, বালুচিস্তানে সম্প্রতি BLA কর্তৃক জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের ঘটনাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য লজ্জা বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, আমরা সেদিনই বালুচিস্তান হারিয়ে ফেলেছি। নিজেদের মর্যাদা খুঁইয়েছি। সব একেবারেই শেষ হয়ে গিয়েছে। অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান রোষের কারণেই বালুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়াতে ক্রমশ অস্থিরতা বাড়ছে।
অবশ্যই পড়ুন: কেমন আছে নারিন? আদৌ আর IPL খেলবেন? KKR তারকাকে নিয়ে বড় আপডেট
এমন আবহে তড়িঘড়ি সেনাপ্রধান জেনারেল মুনিরকে ক্ষমতা থেকে সরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন পাক সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা। এখন প্রশ্ন, এমন জনরোষ, সেনাবাহিনীর অন্তর্দ্বন্দ্ব ও জুনিয়র অফিসারদের বিরোধিতার মাঝে মুনির কি নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন?
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |