বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মায়ানমারে জন্তা সরকারের সাথে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির চলমান সংঘর্ষে বড় ধাক্কা খেলো চিন(China)! খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দেশটির বিরল খনিজ সমৃদ্ধ সব এলাকাই ইতিমধ্যেই দখল করে নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি। সূত্রের খবর, কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির কাছে মাথা ঝুঁকিয়েছে জান্তা সরকার।
যার জেরে উত্তর মায়ানমারের কাচিনের একটি খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে KIA। ওয়াকিবহালমহল বলছে, জান্তা সরকারের এমন দুরবস্থার কারণে মায়ানমারে চিনের বাণিজ্য একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে।
কতটা ক্ষতি হবে ড্রাগনের দেশের?
একাধিক রিপোর্ট মারফত খবর, কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি কর্তৃক উত্তর মায়ানমারের যে খনি খাত দখল করা হয়েছে তা থেকে বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ আমদানি করত চিন। বলে রাখি, বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ পাওয়ার লোভে কাচিন রাজ্যে বড় বিনিয়োগ করেছিল চিন।
তবে জান্তা সরকারের পরাজয়ের পর খনিগুলি KIA গোষ্ঠীর হাতে চলে আসায় চিনে বায়ু টারবাইন এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনে ব্যবহৃত খনিজের সরবরাহ বন্ধ হয়। ফলত, স্বাভাবিকভাবেই KIA নিয়ন্ত্রিত খনিজের দাম গগনচুম্বী হবে, যা আখেরে চিনের জন্য দুর্ভাগ্যের।
মাথায় চিনের
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গতবছর অর্থাৎ 2024 সালের একেবারে শেষের দিকে মায়ানমারের খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চল গুলির বেশিরভাগেরই নিয়ন্ত্রণ নেয় KIA। সূত্র বলছে, রাজ্যজুড়ে বৃহৎ খনিজ উত্তোলন স্থলগুলি দখল করে নেওয়ায় চিনে বায়ু টারবাইন এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনে ব্যবহৃত বিভিন্ন খনিজ সম্পদ গুলির সরবরাহ ব্যাহত হয়।
কাজেই বলা চলে, গত বছর থেকেই চিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে একেবারে উঠে পড়ে লেগেছিল কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি। সম্প্রতি চিনের কাস্টমস বিভাগের তরফে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমার থেকে আমদানিকৃত বিরল মাটির অক্সাইড এবং যৌগের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় 311 মেট্রিক টন। যেই হিসেবটা গত বছরের তুলনায় প্রায় 89 শতাংশ কম।
কাচিনের বিভিন্ন খনিজ সমৃদ্ধ এলাকা গুলিতে KIA ক্রমশ তাদের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করায় মায়ানমারে চিনের বাণিজ্য একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। কাচিনাল্যান্ড গবেষণা কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী পরিচালক ড্যান সেং লওয়ান জানিয়েছেন, মূলত চিনের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতেই মায়ানমারের একের পর এক খনি গুলির দখল নিচ্ছে KIA।
অবশ্যই পড়ুন: মিলছে না অনুশীলনের জায়গা! সেমির আগে দুশ্চিন্তায় মোহনবাগান
কাচিনের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, উত্তর মায়ানমারের খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলটির ওপর নজর রয়েছে ভারতেরও। সূত্র বলছে, গত বছরের একেবারে শেষ লগ্নে বিরল পৃথিবী খনি এবং পরিশোধন কোম্পানির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে উত্তর মায়ানমারের খনিজ সমৃদ্ধ কাচিনে পাঠিয়েছিল ভারত।