ঢাকাঃ বিগত কিছু সময় ধরে দফায় দফায় অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সংরক্ষণের বিরুদ্ধে ছাত্র বিক্ষোভ তারপরে নতুন সরকারে গঠন সব মিলিয়ে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। সাম্প্রদায়িক হিংসায় ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে বেশিরভাগ দাবি করা হচ্ছে মৃত্যু হয়েছে হিন্দুদের। অভিযোগ, ওপার বাংলায় বহু হিন্দু মন্দির থেকে শুরু করে গুরুদ্বারা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন সরকার গঠন হবার পরেও সেখানে হিন্দুদের পরিস্থিতি মোটেও উন্নতি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আর এসবেরই প্রতিবাদে এবার বাংলাদেশের রাস্তায় নামল হিন্দুদের বিশাল ঢল। বিক্ষোভের শামিল হলেন লক্ষ লক্ষ হিন্দুরা। বাংলাদেশের রাস্তায় উঠল জয় শ্রী রাম স্লোগান।
এবার প্রতিবাদ শুরু হিন্দুদের
ইতিমধ্যে ক্ষমতা বদল হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে বর্তমানে ভারতের আশ্রয় নিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে সেখানে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্ষমতায় এসেছেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনুস। কিন্তু তারপরও যেন হিংসা থামতে চাইছে না সে দেশে। এহেন অবস্থায় এবার বাধ্য হয়েছে অত্যাচারের প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন হিন্দুরা।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই বিশাল সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে হিংসা কবলিত বাংলাদেশের ৫২টি জেলায় ২০৫টিরও বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
মৃত্যু হয়েছে শয়ে শয়ে মানুষের
কয়েকশ হিন্দুর বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে। মৃত ও আহত হয়েছেন অনেকে। বেশ কয়েকটি হিন্দু মন্দিরও ভাঙচুর করা হয়েছে এবং এই হিংসায় এখনো পর্যন্ত শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লিগের সাথে যুক্ত কমপক্ষে দু’জন হিন্দু নেতা নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার বাংলাদেশি হিন্দুও হিংসা ও অকথ্য অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুনঃ হাজার হাজার নয়, মাত্র ২৪০ টাকায় ড্রাইভিং লাইসেন্স! বিশেষ সুবিধা রাজ্যের তরফে
সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকারীদের দ্রুত বিচার, সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ, সংখ্যালঘু রক্ষা আইন প্রণয়নসহ অন্যান্য আইনের আওতায় আনার দাবিতে হিন্দু বিক্ষোভকারীরা তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক চেরাগী পাহাড় চত্বরে এক বিশাল সমাবেশ হয়। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সমাবেশে সাত লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেয়। একই ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। এদিকে এক প্রতিবাদকারীকে পালটা মার দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায়। সেই ব্যক্তি বলেন, ‘যে মন্দির ভাঙতে আসবে, তাকে গুঁড়িয়ে দেব এবার।’