নয়া দিল্লিঃ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশ অনেক ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ। তাই দুটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা প্রায়ই সফর করেন অপর দেশে। সম্প্রতি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ভারত সফরে এসেছেন। আর ভারতে এসে তাঁকে বিতর্কিত ইসলামিক বক্তা জাকির নায়েককে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এই বিষয়টি নিয়ে তিনি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি ভারতের পক্ষ থেকে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সরবরাহ করা হয়, তবে মালয়েশিয়া সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেবে না।
ভারতে এসে আনোয়ার ইব্রাহিম আরও উল্লেখ করেছেন যে, যদিও এই বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে সরাসরি আলোচনা হয়নি, মালয়েশিয়া এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, এই একটি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া উচিৎ নয়। মালয়েশিয়া সবসময় সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং এই বিষয়ে ভারতের সাথে সহযোগিতা করেছে। তবে, তিনি পরিষ্কারভাবে জানান, মালয়েশিয়া জাকির নায়েককে তখনই প্রত্যর্পণ করবে, যখন তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট এবং গ্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যাবে।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারত ছেড়েছিল জাকির নায়েক
জাকির নায়েক ২০১৬ সালে ভারত থেকে মালয়েশিয়ায় চলে যান। কারণ তিনি ভারতের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি তাঁর বক্তৃতার মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষকে উস্কে দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে উগ্রপন্থার প্রচার করার অভিযোগও ছিল। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এবং তদন্ত শুরু করে।বিশেষ করে, ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ উস্কে দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল।
মালয়েশিয়ায় গিয়ে আশ্রয় পেয়েছিলেন জাকির নায়েক
এই পরিস্থিতিতে তিনি দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেন। মালয়েশিয়া জাকির নায়েককে আশ্রয় দিয়েছিল মূলত ধর্মীয় ও মানবিক কারণে। মালয়েশিয়া সরকার নায়েককে তার স্থায়ী আবাসনের অধিকার দেয় এবং জানায় যে, যদি তিনি মালয়েশিয়ার কোনো আইন ভঙ্গ না করেন, তবে তাকে নিরাপদে থাকতে দেওয়া হবে।মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মোহাম্মদও একাধিকবার উল্লেখ করেছিলেন যে, নায়েককে তার দেশে স্বাগত জানানো হয়েছে কারণ তিনি মালয়েশিয়ার জন্য কোনো হুমকি সৃষ্টি করছেন না এবং তাকে বিতাড়ন করা হলে তার জীবনের ঝুঁকি থাকতে পারে। তবে মালয়েশিয়ার সরকার তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ না পাওয়ায় তাঁকে এখন পর্যন্ত ভারতে ফেরানো করা হয়নি।