আশঙ্কাই হল সত্যি! দেউলিয়া হওয়ার পথে মলদ্বীপ, হাত তুলে নিল চিনও

Published on:

Maldives is burdened by foreign debt, even China is not helping in difficult times

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চরম অর্থ সঙ্কটে ভারতের প্রতিবেশী দ্বীপ রাষ্ট্র মলদ্বীপ (Maldives)! সূত্রের খবর, দীপ রাষ্ট্রটিতে ঋণ সঙ্কট প্রবল আকার ধারণ করেছে। জানা যাচ্ছে,আগামী দিনে মলদ্বীপের বর্তমান অবস্থার উন্নতি না হলে অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মলদ্বীপের আর্থিক সঙ্কট বাড়তে থাকলে শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া দেশের তকমা পেতে পারে দ্বীপ রাষ্ট্রটি।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল IMF

বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের তরফেও মলদ্বীপের বর্তমান অবস্থার সম্পর্কে ইঙ্গিত করা হয়েছিল। আইএমএফের পক্ষ থেকে মলদ্বীপ যে চরম অর্থ সঙ্কটের মুখোমুখি হতে পারে এ কথা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়। যেই আশঙ্কা বর্তমান পরিস্থিতির সাথে হুবহু মিলে গিয়েছে।

কেন মলদ্বীপের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা?

প্রকাশ্যে আসা বেশ কিছু রিপোর্ট বলছে, প্রথমত, বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা নিয়ে একপ্রকার ধুঁকছে মলদ্বীপ। সেই সাথে দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। সূত্র বলছে, মলদ্বীপের বৈশ্বিক ঋণের পরিমাণ নাকি 340 কোটি ডলার। হ্যাঁ, এই বিপুল পরিমাণ ঋণের বেশিরভাগটাই মূলত ভারত এবং চিনের কাছ থেকে নেওয়া।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

যদিও দ্বীপ রাষ্ট্রটির তরফে বেশ কয়েকবার কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তবে তাতে কাজের কাজ হয়নি। সূত্রের খবর, মলদ্বীপের তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জ ছিল 2025 সালে 60 কোটি ও 2026 সালে 100 কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধ করা। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই নাকি এখন একাধিক দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিচ্ছে মলদ্বীপের সরকার।

অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটাতে বড় পদক্ষেপ মলদ্বীপ সরকারের?

বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জুর সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, মলদ্বীপ সরকারের তরফে পর্যটকদের ওপর বিপুল পরিমাণ করের বোঝা চাপানো হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের বেতন কমানো থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলির শেয়ার বিক্রি করারও পরিকল্পনা করছে মলদ্বীপ সরকার। সূত্র অনুযায়ী, কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে বিমানবন্দর বাড়ানো ও হোটেলের সংখ্যা বৃদ্ধির দিকেও নজর দিয়েছে সরকার।

মলদ্বীপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল চিন

সূত্রের খবর, আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতিতে দীপ রাষ্ট্রটিতে বন্দর ও হোটেল বাড়ানোর পাশাপাশি উপসাগরীয় দেশ গুলির কাছ থেকে আর্থিক সাহায্যও চেয়েছে মলদ্বীপ। জানা যাচ্ছে, সেই সূত্র ধরেই চিনের ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের কাছেও 20 কোটি ডলারের সাহায্য চেয়েছে মলদ্বীপ। একই সাথে, মুদ্রা বিনিময় থেকে শুরু করে ঋণের পদ্ধতি সহজ করা ও ঋণ পরিশোধের উপায় সরল করার বিষয়েও আবেদন জানানো হয়েছে।

তবে শোনা যাচ্ছে, জিনপিং সরকারের তরফে মলদ্বীপের কোনও আবেদনেই সারা দেওয়া হয়নি। এক কথায় বলা যায়, বন্ধু মলদ্বীপের দুঃসময়ে কার্যত রাষ্ট্রটির কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে নিয়েছে চিন! বলা বাহুল্য, মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেজিং ও মলদ্বীপের মধ্যে সখ্যতা ক্রমশ গভীর হয়। দিনে দিনে মলদ্বীপের বন্ধু দেশ হয়ে উঠেছিল চিন।

জানা গিয়েছে, মলদ্বীপে মইজ্জু সরকার গঠনের সময় দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে তহবিল দিয়ে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছিল চিনের সরকার। এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, বর্তমানে চিনের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ ঋণ নিয়ে তা এখনও শোধ করতে পারেনি মলদ্বীপ। উপরি চাহিদা হিসেবে দেশটির কাছ থেকে আরও অর্থ চাওয়া হয়েছে। তবে চিনের তরফে মলদ্বীপ সরকারের সেই আবেদনকে একেবারেই সময় দেওয়া হয়নি। কাজেই প্রশ্ন উঠছে, বন্ধু দেশের কঠিন সময়ে কি মুখ ফিরিয়ে নেবে চিন? উত্তর দেবে সময়।

মলদ্বীপের কাঁধে বিপুল ঋণের বোঝা

বেশ কিছু প্রতিবেদন মারফত খবর, 2018 সালের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মলদ্বীপের ওপর বিদেশি ঋণের বোঝা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 2018 সালে যেখানে মলদ্বীপের ওপর ঋণের বোঝা ছিল মাত্র 300 কোটি, সেই সংখ্যাটা বছরের পর বছর ধরে বাড়তে বাড়তে 2024 সালের মার্চের হিসেব অনুযায়ী 820 কোটিতে গিয়ে ঠেকে। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, আগামী 2029 সালের মধ্যে দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিদেশি ঋণের বোঝা 1100 কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

অবশ্যই পড়ুন: সুপার কাপের আগে ইস্টবেঙ্গলের কোচিং স্টাফে পরিবর্তন? জল্পনা বাড়াল এক ছবি

উল্লেখ্য, শুরু থেকেই মইজ্জু সরকারের সাথে চিনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ার কারণে ভারতের সাথে ক্রমশ সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে মলদ্বীপের। একটা সময়ের পৌঁছে, সম্ভবত চিনের মদতে ভারতকে দ্বীপ রাষ্ট্রটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য এক প্রকার চাপ দিচ্ছিল মইজ্জু।

সূত্রের খবর, ভারতের তরফে প্রথম দিকে সাহায্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হলেও পরবর্তীতে তা কমিয়ে আনা হয়। তবে 2025-26 অর্ধ বর্ষের বাজেট পেশের সময় মলদ্বীপের সাহায্যের পরিমাণ আবারও 28 শতাংশ বাড়িয়েছে কেন্দ্র। বলে রাখি, শেষবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, 2024 সালের অন্তরবর্তী বাজেটেও প্রতিবেশী মলদ্বীপের উদ্দেশ্যে 600 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group