সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পহেলগাঁও হামলার জবাবে ভারতের করা অপারেশন সিঁদুরে (Operation Sindoor) কেঁপে উঠেছিল পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলি। হ্যাঁ, অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) জঙ্গিঘাঁটিতে বিরাট আঘাত হেনেছিল ভারত। তারপর থেকেই ভয়ে বাতাবরণ তৈরি হয়েছে জঙ্গিদের মধ্যে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর আর নিরাপদ নয়, এমনটা ভেবেই সেখান থেকে ঘাঁটিগুলি গুটিয়ে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নতুন আস্তানা খুঁজছে এবার জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ ও হিজবুল মুজাহিদিন।
PoK ছেড়ে এবার নতুন আস্তানা
নবভারতের রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, এতদিন পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছিল এদের প্রশিক্ষণ শিবির এবং নিয়োগের মূল কেন্দ্র। তবে ভারতীয় বাহিনীর বিমানবাহিনী এবং ড্রোন হামলাতে সেই ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে যায়। আর এরপর থেকেই বিকল্প জায়গা খোজ করা শুরু করে জঙ্গি সংগঠনগুলি। তারা পাখতুনখোয়াকে বিকল্প হিসাবে বেছে নেয়, যেটি আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় থেকেই চরমপন্থীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত।
গোয়েন্দাদের এক রিপোর্ট বলছে, গত 14 সেপ্টেম্বর মানসেহরা জেলায় গাড়ি হাবিবুল্লাহ শহরে এক নিয়োগ সমাবেশ করেছিল জইশ-ই-মোহাম্মদ জঙ্গি সংগঠন। আর সেখানে ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের অন্যতম নেতা মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরী উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় প্রকাশ্যে ওসামা বিন লাদেনের প্রশংসাও করা হয়েছিল। গোয়েন্দারা মনে করছে, এর মাধ্যমে জইশ-ই-মোহাম্মদ আসলে নিজেদের ভাবধারা আল-কায়েদার সঙ্গেই মেলাতে চাইছে।
সামনে বড়সড় পরিকল্পনা
সূত্র মারফৎ খবর, আগামী 25 সেপ্টেম্বর পেশোয়ারে আরও একটি বড় সভার আয়োজন করেছে জইশ-ই-মোহাম্মদ। এই অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহারের ভাই ইউসুফ আজহারকে স্মরণ করা হবে, যাকে অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতীয় সেনারা খতম করেছিল। অন্যদিকে হিজবুল মুজাহিদিনও খাইবার পাখতুনখোয়াতে নতুন করে ঘাঁটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে। HM 313 নামের এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও বানানো হচ্ছে প্রাক্তন পাক কমান্ডো খালিদ খানের নেতৃত্বে। সূত্র বলছে, গত বছর আগস্ট মাসে জমি কেনা হয়েছিল আর অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে নির্মাণ কাজ আরও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগেই সুখবর, আজ থেকেই বাড়ছে গ্রিন লাইনে মেট্রো পরিষেবা!
গোয়েন্দাদের এক রিপোর্ট স্পষ্ট বলছে, পাকিস্তান সরকারের প্রত্যক্ষ মদতেই এই জঙ্গি সংগঠনগুলি আবার শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করছে। পুলিশ পর্যন্ত নিরাপত্তা দিচ্ছে। মানে ভাবতে পারছেন! আর এতে বোঝাই যাচ্ছে যে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপে মুখে বড়সড় কথা বললেও আড়ালে পাকিস্তান সরকার নিজেরাই তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।