১০০ বছরে এমন বিপদ আসেনি, বন্যায় প্রবল সঙ্কটে ২০ লক্ষ মানুষ! চরম দুর্ভোগ পাকিস্তানে

Published on:

Million of people affected for Pakistan floods-bkm

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে পাকিস্তান (Pakistan Flood)। একটানা বৃষ্টি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জলের তলে পশ্চিমের দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশ। পাক সংবাদমাধ্যম ডনের রিপোর্ট বলছে, একনাগাড়ে বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে জল ছাড়ার কারণে পাকিস্তানের নদীগুলির জলস্তর রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে বন্যার জল।

একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, টানা বেশ কয়েকদিন ধরে পাকিস্তানে বন্যার কারণে ঘর ছাড়া লক্ষাধিক মানুষ। নিজেদের সহায়, সম্বল, এমনকি মাথা গোজার ঠাঁই টুকু হারিয়ে আজ রাস্তায় এসে উঠেছেন পাকিস্তানিরা। যদিও, পাঞ্জাবের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে পাক প্রশাসন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, এই ভয়াবহ বন্যার জের, 50-100 বছর পিছিয়ে গিয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ। বিশেষজ্ঞদের দাবি, গত 100 বছরে এমন বিধ্বংসী বন্যা দেখেনি পাকিস্তান।

ঠিক কোন কারণে বন্যায় ভাসছে পাকিস্তান?

বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই পাকিস্তানে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। আর সেটা হয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে। চলতি বছর পশ্চিমের দেশে রেকর্ড হারে বৃষ্টি হয়েছে। একটানা মুষলধারে বৃষ্টিপাত এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফলে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমের পাহাড়ি অঞ্চলে একের পর এক হড়পা বান ও ভূমিধসের ঘটনা সামনে এসেছে।

তাছাড়াও পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যম বলছে, সতর্ক করার পরই বাঁধের জল ছেড়ে দেয় ভারত, আর তাতেই পাকিস্তানের বন্যায় নতুন মাত্রা জুড়েছে। পাঞ্জাব প্রদেশের সিনিয়র মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব সাফ জানান, পাঞ্জাবের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্যা হয়েছে এ বছর। শুধু তাই নয়, ভয়াবহ বন্যার জের চলতি বছরে পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও দিয়েছেন তিনি।

ইন্ডিয়াহুডের বিশেষ প্রতিবেদন

বন্যার কারণে পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সিনিয়র মন্ত্রী আওরঙ্গজেব জানান, চলতি বছর ভয়াবহ বন্যার কারণে অন্তত 20 লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রথমবার একসঙ্গে ফুলে ফেঁপে উঠেছে শতদ্রু, চেনাব এবং রবি নদী। এই তিন নদীর জলস্তর বিপদ সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় নেমে এসেছে বন্যা। পাকিস্তানের সরকারি সূত্র বলছে, গত 26 জুন থেকে একটানা বিপর্যয়ের কারণে দেশটিতে 849 জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই হিসেবটা আরও বেশি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও ভয়াবহ বন্যার কারণে আহত হয়েছেন 1100 জনেরও বেশি মানুষ।

অবশ্যই পড়ুন: নজরে ভারত, অ্যাসেজ ও বিশ্বকাপ! আচমকাই T20 থেকে অবসর মিচেল স্টার্কের

রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ নাকি সেচ বিভাগকে সুপার ফ্লাডের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে পাকিস্তানের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের তরফে জানানো হয়, ভয়াবহ বন্যার জেরে দেশের 2000টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় 7 লক্ষ 60 হাজারেরও বেশি মানুষ, 5 লক্ষ 16 হাজারেরও বেশি পশু পাখিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয় রিপোর্ট বলছে, এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে পাকিস্তানে বন্যার কারণে 33 জন বা তার বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রবল বর্ষণের কারণে ভূমিধস দেখা দেয়। ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে পাঞ্জাবের এই প্রদেশটিতেই 400 জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন, আহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি। সেই সব বিষয় মাথায় রেখেই পাকিস্তানের একাধিক প্রদেশে হাই অ্যালার্ট জারি করার পাশাপাশি প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥