সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ওপার বাংলায় যেন এক অস্থির রাজনৈতিক আবহ তৈরি হয়েছে। ঢাকার রাজপথে সেনাবাহিনীর (Bangladesh Army) তৎপরতা এখন বড্ড বেশি চোখে পড়ছে। শত শত সেনা সদস্যকে রাজধানীর রাস্তায় মোতায়ন করা হয়েছে। আর এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন তুলছে, তাহলে কি সেনাবাহিনী কিছু কড়া সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে? নাকি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে তাড়ানোর কোন ষড়যন্ত্র? আর এই গুঞ্জনের মধ্যেই সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামানের নির্দেশে প্রতিটি ব্রিগেড থেকে ১০০ জন করে সেনা ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সাভারের নবম ডিভিশন থেকে সেনারা একের পর এক রাজধানীতে পা ফেলছে। আর এরকম পরিস্থিতি রাজনৈতিক মহলে ক্রমশই হাওয়া গরম হয়ে উঠছে।
সেনাদের তৎপরতা বাড়ল কেন?
বেশ কিছু সূত্র বলছে, সেনা সমাবেশের পিছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সেনাবাহিনী সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরো শক্তিশালী করতে চাইছে। পাশাপাশি হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের সাথে সেনাবাহিনীর সম্পর্কের ফাটল ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে নাকি সরানোর ষড়যন্ত্র চলছে। এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার রাজপথে সেনাদের উপস্থিতি এখন বাংলাদেশের হাওয়া আরও গরম করছে। এরকম সেনা তৎপরতা সাধারণত তখনই দেখা যায়, যখন কোন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন আসে।
সেনা প্রধানকে নিয়ে বিতর্ক
সেনাবাহিনীর এই তৎপরতা কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হয়নি। এর পিছনে রয়েছে এক গোপন বৈঠক এবং কিছু বিতর্কিত মন্তব্য। সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের নেতা আসিফ মাহমুদ শাজিব ভূঁইয়া দাবী করেছিলেন যে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মেনে নিয়েছিল। পাশাপাশি আরেক ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ১১ই মার্চ জেনারেল জামানের সঙ্গে এক গোপন বৈঠকের কথাও ফাঁস করে দেন। আর এই সমস্ত তথ্যগুলি প্রকাশ্যে আসার পরেই সেনাবাহিনী এবং রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি
জানলে অবাক হবেন, ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহ প্রকাশ্যে সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করার হুঁশিয়ার দিয়েছে। তিনি দাবি করেন, সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার ফেরার রাস্তা সহজ করতে চাইছে, যা ছাত্র আন্দোলনের মূল আদর্শের সাথে খাপ খায় না। অন্যদিকে সেনাবাহিনী দ্রুত একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে ছাত্রদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইছে। এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির কীভাবে শেষ হবে? সেনাবাহিনী কি এবার সত্যিই পদক্ষেপ নেবে?
আরও পড়ুনঃ চাচা প্রধানমন্ত্রী, বাবা প্রাক্তন PM, ছেলে দেউলিয়া! এবার ইংরেজরা উসুল করবে ‘লগান’
মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা
এদিকে মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু তার অবস্থান ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে। তিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার মন্ত্রিসভায় অনেক সদস্য ভারত বিরোধী। তিনি বিমস্টেক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একটি বৈঠকেরও চেষ্টা করেন। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তিনি জানান যে, সেনাবাহিনী তার পক্ষে নেই। তাই নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করছেন তিনি। বেশ কিছু সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, আগামী ২৬শে মার্চ মুহাম্মদ ইউনূস ৩ দিনের জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন। অনেকে বলছেন, এটাই হয়তো তার ভবিষ্যতের মোড় ঘোরানোর প্রধান সুযোগ। এখন দেখার ভবিষ্যতে জল কোন দিকে গড়ায়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |