নিজের হাতেই ২৭টি মন্ত্রক রাখলেন ইউনূস, হিন্দুদের নিয়ে করলেন বড় ঘোষণা

Published on:

muhammad yunus

ঢাকাঃ দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হল। তবে এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দীর্ঘ ১৫ বছরের আওয়ামী লিগের সরকারের পতন হয়েছে বাংলাদেশে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এরপরেই গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ৮৪ বছর বয়সী ড. ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী পদের সমতুল্য প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করান।

বড় বার্তা ইউনূসের

WhatsApp Community Join Now

নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেই ইউনূস দেশবাসীকে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই তাদের অগ্রাধিকার।’ যাইহোক, ২৭টি মন্ত্রক নিজের হাতে রাখলেন তিনি। বৃহস্পতিবার ইউনূসের সঙ্গে শপথ নেন আরও ১৩ জন। ১৮টি মন্ত্রকের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সকলের মধ্যে ১৮টি মন্ত্রকের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সবথেকে চমকপ্রদ বিষয় হল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদও শপথ নিয়েছেন। তাঁরা মন্ত্রক পেয়েছেন।

তিনটি মন্ত্রক পেলেন দুই ছাত্রনেতা

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ড. ইউনূসকে শুধু অভিনন্দনই জানাননি, ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। ইউনূস তার বক্তব্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য গর্বের দিন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। যারা আমাদের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করার জন্য বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, আমরা তাদের দমন করব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাংলাদেশে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইউনূসকে সহায়তা করার জন্য ১৬ সদস্যের একটি উপদেষ্টা পরিষদও ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা মুহাম্মদ নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদও এই কাউন্সিলে রয়েছেন।

এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের নাম সুপারিশ করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। প্যারিসে চিকিৎসাধীন ড. ইউনূস বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরেছেন। বিমানবন্দরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ছাত্রনেতারা তাকে স্বাগত জানাতে আসেন। ড. ইউনূস সেখানকার জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা যদি আমার কথা বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, দেশের কোথাও কারও ওপর কোনও হামলা হবে না। এটাই আমাদের অঙ্গীকার। যদি আমি তা করতে না পারি এবং আপনি আমার কথা না শোনেন তবে আমার এখানে কোনও দরকার নেই। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলাকে ষড়যন্ত্র বলে বর্ণনা করেন তিনি।

কোন কোন মন্ত্রক নিজের কাছে রাখলেন ইউনূস?

মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে যে যে মন্ত্রকগুলি রয়েছে সেগুলি হল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রক, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রক, খাদ্য মন্ত্রক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রক, ভূমি মন্ত্রক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রক, কৃষি মন্ত্রক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক, রেল মন্ত্রক, জনপ্রশাসন মন্ত্রক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রক, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রক, জল সম্পদ মন্ত্রক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রক, বাণিজ্য মন্ত্রক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক, অসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রক, সংস্কৃতি মন্ত্রক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রক।

এদিকে ছাত্রনেতা মুহাম্মদ নাহিদ ইসলাম পেয়েছেন ডাক মন্ত্রক, টেলি যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। আসিফ মাহমুদ পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রক।

সঙ্গে থাকুন ➥