ভ্যাটিকান সিটির আদলে তৈরি হবে নয়া মুসলিম দেশ, মহিলাদের দেওয়া হবে পূর্ণ স্বাধীনতা

Published on:

muslims

দেবপ্রসাদ মুখার্জী: ইউরোপের একটি ক্ষুদ্র দেশ হল ভ্যাটিকান সিটি। এই দেশে মূলত রোমান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। তবে এবার মুসলিমপ্রধান একটি ছোট্ট দেশ গড়ার পরিকল্পনা তৈরি হয়ে গেল। আলবেনিয়ার তিরানায় একটি ক্ষুদ্র মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

WhatsApp Community Join Now

এই নতুন রাষ্ট্রটি ‘সোভেরেইন স্টেট অফ দ্য বেকতাশি অর্ডার’ নামে পরিচিত হতে চলেছে। পাশাপাশি, এই দেশটি ভ্যাটিকান সিটির আদলে গঠিত হবে। শিয়া সুফিবাদের একটি শাখা বেতকাশি সম্প্রদায় এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, বেকতাশি সম্প্রদায় বহুদিন ধরে আলবেনিয়াসহ অন্যান্য বালকান দেশগুলিতে সহিষ্ণু ইসলামের প্রচার করে আসছে।

কট্টর ইসলামপন্থাকে বর্জন করবে এই দেশ

সম্প্রতি, আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এদি রামা এবং বেকতাশি নেতা এডমন্ড ব্রাহীমাজ, যিনি বাবা মন্ডি নামে পরিচিত, যৌথভাবে এই রাষ্ট্রের পরিকল্পনা সম্পর্কে ঘোষণা করেন। রামার মতে, এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গঠনের মূল লক্ষ্য হলো ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও উদার ইসলামের প্রচার। আলবেনিয়া ইতিমধ্যেই ধর্মীয় সহিষ্ণুতার জন্য সুপরিচিত, যেখানে মুসলিম, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে রয়েছে। এই পরিকল্পনা আলবেনিয়ার ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র তৈরি হবে তিরানায়

এই নতুন রাষ্ট্রের আকার হবে মাত্র ২৭ হেক্টর, যা ভ্যাটিকান সিটির এক চতুর্থাংশ। এই দেশের নিজস্ব প্রশাসন, সীমান্ত, এবং পাসপোর্ট থাকবে। তবে নতুন এই দেশের সামরিক বাহিনী থাকবে না। রাষ্ট্রটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে মহিলারা স্বাধীনভাবে পোশাক পরতে পারবেন এবং দেশে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ হবে না। এর মাধ্যমে ইসলামের একটি উদার ও আধুনিক সংস্করণ প্রচার করা হবে, যা ধর্মীয় কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে একটি প্রতীকী অবস্থান নেবে।

বেকতাশি সম্প্রদায়ের ইতিহাস

বেকতাশি সম্প্রদায় ১৩শ শতকে তুরস্কে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে আলবেনিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক যখন বেকতাশি সম্প্রদায়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন, তখন তাদের প্রধান কার্যালয় তিরানায় স্থানান্তরিত হয়। বেকতাশিরা সুফিবাদের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে সংযুক্ত, যা মূলত মিস্টিসিজম বা আধ্যাত্মিক সাধনার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তাদের ধর্মীয় চর্চায় শিথিলতা এবং উদারতা রয়েছে, যা তাদের রক্ষণশীল মুসলিম সমাজ থেকে আলাদা করে রেখেছে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইছেন বাবা মন্ডি

বাবা মন্ডি উল্লেখ করেছেন যে, তারা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইছেন। বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির কাছ থেকে তাঁরা এই বিষয়ে সহাবস্থান চাইছেন। তবে এই পরিকল্পনাটি আলবেনিয়ার সংসদে অনুমোদন পেতে হবে, যা আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। রামা তার দলীয় সরকারকে দিয়ে এই প্রস্তাব পাস করানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। যদিও ইরানের মতো দেশগুলো থেকে স্বীকৃতির সম্ভাবনা নেই। কারণ আলবেনিয়া এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উদার ইসলামিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X